পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

898 झील-मनावनी জাত ধাচাইবার জন্য বাঙালি ছাত্রদের একটি স্বতন্ত্ৰ জলখাবারের ঘর ছিল। এই ঘরে দুই-একটি ছাত্রের সঙ্গে আমাদের আলাপ হইল। তাহদের সকলেই আমাদের চেয়ে বয়সে অনেক বড়ো। তাঁহাদের মধ্যে একজন কফি রাগিণীটা খুব ভালোবাসিত এবং তাহার চেয়ে ভালোবাসিত শ্বশুরবাড়ির কোনো একটি বিশেষ ব্যক্তিকে- সেইজন্য সে ঐ রাগিণীটা প্রায়ই আলাপ করিত এবং তােহর অন্য আলাপটারও বিরাম ছিল 市1 আর-একটি ছাত্রসম্বন্ধে’ কিছু বিত্তার করিয়া বলা চলিবে। তাহার বিশেষত্ব এই যে, ম্যাজিকের শখ তাহার অত্যন্ত বেশি। এমনকি, ম্যাজিক সম্বন্ধে একখানি চটি বই বাহির করিয়া সে আপনাকে প্রোফেসর উপাধি দিয়া প্রচার করিয়াছিল। ছাপার বইয়ে নাম বাহির করিয়াছে, এমন ছাত্রকে ইতিপূর্বে আর কখনো দেখি নাই। এজন্য অন্তত ম্যাজিক বিদ্যা সম্বন্ধে তাহার প্রতি আমার শ্রদ্ধা গভীর ছিল । কারণ, ছাপা অক্ষরের খাড়া লাইনের মধ্যে কোনোরূপ মিথ্যা চালানো যায়, ইহা আমি মনেই করিতে পারিতাম না। এ-পর্যন্ত ছাপার অক্ষর আমাদের উপর গুরুমশায়গিরি করিয়া আসিয়াছে, এইজন্য তাহার প্রতি আমার বিশেষ সন্ত্রম ছিল । যে-কালি মোছে না, সেই কালিতে নিজের রচনা লেখা"- এ কি কম কথা ! কোথাও তার আড়াল নাই, কিছুই তার গোপন করিবার জো নাই- জগতের সম্মুখে সার বাধিয়া সিধা দাড়াইয় তাহাকে আত্মপরিচয় দিতে হইবে- পলায়নের রাস্তা একেবারেই বন্ধ, এতবড়ো অবিচলিত আত্মবিশ্বাসকে বিশ্বাস না করাই যে কঠিন । বেশ মনে আছে, ব্ৰাহ্মসমাজের ছাপাখানা অথবা আর-কোথাও হইতে একবার নিজের নামের দুই-একটা ছাপার অক্ষর পাইয়াছিলাম। তাঁহাতে কালি মাখাইয়া কাগজের উপর টিপিয়া ধরিতেই যখন ছাপ পড়িতে লাগিল, তখন সেটাকে একটা স্মরণীয় ঘটনা বলিয়া মনে হইল । সেই সহপাঠী গ্রন্থকার বন্ধুকে রোজ আমরা গাড়ি করিয়া ইস্কুলে লইয়া যাইতাম। এই উপলক্ষে সর্বদাই আমাদের বাড়িতে তাহার যাওয়া-আসা ঘটিতে লাগিল। নাটক-অভিনয় সম্বন্ধেও তাহার যথেষ্ট উৎসাহ ছিল। তাহার সাহায্যে আমাদের কুক্তির আখড়ায় একবার আমরা গোটকতক বঁখারি পুঁতিয়া, তাহার উপর কাগজ মারিয়া, নানা রঙের চিত্র আঁকিয়া একটা স্টেজ খাড়া করিয়াছিলাম। বোধ করি উপরের নিষেধে 6अ-6र्नेgछ अलिकाम्न घgिछ °itद्र नाश् । কিন্তু বিনা স্টেজেই একদা একটা প্ৰহসন অভিনয় হইয়াছিল। তাহার নাম দেওয়া যাইতে পারে ভ্ৰান্তিবিলাস। যিনি সেই প্রহসনের রচনাকর্তা পাঠকেরা তাহার পরিচয় পূর্বে কিছু কিছু পাইয়াছেন। তিনি আমার ভাগিনেয় সত্যপ্ৰসাদ। র্তাহার ইদানীন্তন শান্ত সৌম্য মূর্তি যাহারা দেখিয়াছেন তাহারা কল্পনা করিতে পরিবেন না, বাল্যকালে কৌতুকচ্ছলে তিনি সকলপ্রকার অঘটন ঘটাইবার কিরাপ ওস্তাদ ছিলেন। যে-সময়ের কথা লিখিতেছিলাম। ঘটনাটি তাহার পরবর্তী কালের । তখন আমার বয়স বোধ করি বারো-তেরো হইবে। আমাদের সেই বন্ধু সর্বদা দ্রব্যগুণসম্বন্ধে এমন সকল আশ্চর্যকথা বলিত, যাহা শুনিয়া আমি একেবারে স্তম্ভিত হইয়া যাইতাম- পরীক্ষা করিয়া দেখিবার জন্য আমার এত ঔৎসুক্য জন্মিত যে আমাকে অধীর করিয়া তুলিত। কিন্তু দ্রব্যগুলি প্রায়ই এমন দুর্লভ ছিল যে, সিন্ধুবাদ নাবিকের অনুসরণ ন করিলে তাহা পাইবার কোনো উপায় ছিল না। একবার, নিশ্চয়ই অসতর্কতাবশত, প্রোফেসর কোনো একটি অসাধ্যসাধনের অপেক্ষাকৃত সহজ পন্থা বলিয়া ফেলাতে আমি সেটাকে পরীক্ষা করিবার জন্য কৃতসংকল্প হইলাম। মনসাসিজের আঠা একুশবার বীজের গায়ে মাখাইয়া শুকাইয়া লইলেই যে সে বীজ হইতে এক ঘণ্টার মধ্যেই গাছ বাহির হইয়া ফল ধরিতে পারে, এ কথা কে জানিত। কিন্তু যে-প্রোফেসর ছাপার বই বাহির করিয়াছে তাহার কথা একেবারে অবিশ্বাস করিয়া উড়াইয়া দেওয়া চলে না । আমরা আমাদের বাগানের মালীকে দিয়া কিছুদিন ধরিয়া যথেষ্ট পরিমাণে মনসাসিজের আঠা সংগ্ৰহ করিলাম এবং একটা আমের আঁটির উপর পরীক্ষা করিবার জন্য রবিবার ছুটির দিনে আমাদের নিভৃত রহস্যনিকেতনে তেতালার ছাদে গিয়া উপস্থিত হইলাম । ১ ম ম্যাজিসিয়ান, গল্পসল্প (হ্য চ হা- হরিশচন্দ্ৰ হলদার) is ar “bygyrff, siwgryw: