পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

। औदनन्यूटि সর্বত্রই নানা লোকালয়ে, নানা কাজে, নানা আবশ্যকে কোটি কোটি মানব চঞ্চল হইয়া উঠিতেছে- সেই ধরণী:ব্যাপী সমগ্ৰ মানবের দেহচাঞ্চলকে সুবৃহৎভাবে এক করিয়া দেখিয়া আমি একটি মহাসৌন্দর্যনৃত্যের আভাস পাইতাম। বন্ধুকে লইয়া বন্ধু হাসিতেছে, শিশুকে লইয়া মাতা লালন করিতেছে, একটা গোরু আর-একটা গোরুর পাশে দাড়াইয়া তাহার গা চাটিতেছে, ইহাদের মধ্যে যে একটি অন্তহীন অপরিমেয়তা আছে তাহাই আমার মনকে বিস্ময়ের আঘাতে যেন বেদনা দিতে লাগিল। এই সময়ে যে লিখিয়ছিলাম’- হৃদয় আজি মোর কেমনে গোল খুলি, জগৎ আসি সেথা করিছে কোলাকুলিইহা কবিকল্পনার অত্যুক্তি নহে। বস্তুত, যাহা অনুভব করিয়ছিলাম তাহা প্ৰকাশ করিবার শক্তি আমার ছিল 市1 কিছুকাল আমার এইরূপ আত্মহারা আনন্দের অবস্থা ছিল। এমন সময়ে জ্যোতিদাদারা স্থির করিলেন, তাহারা দার্জিলিঙে যাইবেন । আমি ভাবিলাম, এ আমার হইল ভালো-সদর শ্ৰীট শহরের ভিড়ের মধ্যে যাহা দেখিলাম হিমালয়ের উদার শৈলশিখরে তাঁহাই আরো ভালো করিয়া, গভীর করিয়া দেখিতে পাইব । অন্তত এই দৃষ্টিতে হিমালয় আপনাকে কেমন করিয়া প্রকাশ করে তাহা জানা যাইবে । কিন্তু সদর শ্রীটের সেই তুচ্ছ বাড়িটারই জিত হইল। হিমালয়ের উপরে চড়িয়া যখন তাকাইলাম তখন হঠাৎ দেখি, আর সেই দৃষ্টি নাই। বাহির হইতে আসল জিনিস কিছু পাইব এইটে মনে করাই বোধ করি আমার অপরাধ হইয়াছিল। নগাধিরাজ যত বড়োই অভ্ৰভেদী হােন না, তিনি কিছুই হাতে তুলিয়া দিতে পারেন না, অথচ যিনি দেনেওয়ালা তিনি গলির মধ্যেই এক মুহুর্তে বিশ্বসংসারকে দেখাইয়া দিতে পারেন। আমি দেবদারুবনে ঘূরিলাম, ঝরনার ধারে বসিলাম, তাহার জলে স্নান করিলাম, কাঞ্চন-শৃঙ্গার মেঘমুক্ত মহিমার দিকে তাকাইয়া রহিলাম-কিন্তু যেখানে পাওয়া সুসাধ্য মনে করিয়াছিলাম সেইখানেই কিছু খুঁজিয়া পাইলাম না। পরিচয় পাইয়াছি কিন্তু আর দেখা পাই না। রত্ন দেখিতেছিলাম, হঠাৎ তাহা বন্ধ হইয়া এখন কোটা দেখিতেছি। কিন্তু কোটার উপরকার কারুকার্য যতই থােক, তাহাকে আর কেবল শূন্য কোটামাত্র वजिशा अभ कब्रियान अलंका ब्रश्लि नां । প্রভাতসংগীতের গান থামিয়া গেল, শুধু তার দূর প্রতিব্বনিস্বরূপ প্ৰতিধ্বনি নামে একটি কবিতা দাৰ্জিলিঙে লিখিয়ছিলাম। সেটা এমনি একটা অবোধ্য ব্যাপার হইয়াছিল যে, একদা দুই বন্ধু বাজি রাখিয়া তাহার অর্থনির্ণয় করিবার ভার লইয়াছিল। হতাশ হইয়া তাহদের মধ্যে একজন আমার কাছ হইতে গোপনে অর্থ বুধিয়া লইবার জন্য আসিয়াছিল। আমার সহায়তায় সে বেচারা যে বাজি জিতিতে পারিয়াছিল এমন আমার বোধ হয় না। ইহার মধ্যে সুখের বিষয় এই যে, দুজনের কাহাকেও হারের টাকা দিতে হইল না। হায় রে, যেদিন পদ্রের উপরে এবং বর্ষার সরোবরের উপরে কবিতা লিখিয়ছিলাম সেই অত্যন্ত পরিষ্কার রচনার श्र्नि कऊनूद्ध गिझा गिझाङ् । কিছু একটা বুঝাইবার জন্য কেহ তো কবিতা লেখে না। হৃদয়ের অনুভূতি কবিতার ভিতর দিয়া আকার ধারণ করিতে চেষ্টা করে। এইজন্য কবিতা শুনিয়া কেহ যখন বলে বুঝিলাম না। তখন বিষম মুশকিলে পড়িতে হয়। কেহ যদি ফুলের গন্ধ ওঁকিয়া বলে কিছু বুঝিলাম না। তাহকে এই কথা বলিতে হয়, ইহাতে বুঝিবার কিছু নাই, এ যে কেবল গন্ধ। উত্তর শুনি,"সে তো জানি, কিন্তু খামক গন্ধই বা কেন, ইহার মানেটা কী।’ হয় ইহার জবাব বন্ধ করিতে হয়, নয় খুব একটা ঘোরালো করিয়া বলিতে হয়, প্রকৃতির ভিতরকার আনন্দ এমনি করিয়া গন্ধ হইয়া প্ৰকাশ পায়। কিন্তু মুশকিল। এই যে, মানুষকে যে কথা দিয়া কবিতা লিখিতে হয় সে কথায় যে মানে আছে। এইজন্য তো ছন্দোবদ্ধ প্রভৃতি নানা উপায়ে কথা কহিবার স্বাভাবিক পদ্ধতি ১ ম ‘প্রভাত উৎসব, ভারতী, লীেৰ ১২৮৯ alNA