পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিচয় ¢ጎፅ শ্ৰীকৃষ্ণকে এই ধর্মের শুরুরূপে দেখিতে পাই- এবং তঁহার উপদেশের মধ্যে বৈদিক মন্ত্র ও আচারের বিরুদ্ধে আঘাতেরও পরিচয় পাওয়া যায়। তাহার দ্বিতীয় প্রমাণ এই- প্রাচীন ভারতের পুরাণে যে দুইজন মানবকে বিষ্ণুর অবতার বলিয়া স্বীকার করিয়াছোৰ্তাহারা দুইজনেই ক্ষত্রিয়—একজনশ্ৰীকৃষ্ণ, আর একজন | শ্ৰীরামচন্দ্র। ইহা হইতে স্পষ্ট বুঝা যায় ক্ষত্রিয়দলের এই ভক্তিধর্ম, যেমন শ্ৰীকৃষ্ণের উপদেশ তেমনি বৃত্তিগত ভেদ হইতে আরম্ভ করিয়া ব্ৰাহ্মণ-ক্ষত্রিয়ের মধ্যে এই চিত্তগত ভেদ এমন একটা সীমায় আসিয়া, দাঁড়াইল যখন বিচ্ছেদের বিদারণ-রেখা দিয়া সামাজিক বিপ্লবের অগ্নি-উন্মুস উদগিরিত হইতে আরম্ভ DBDD SS DBDSDDBBB BDBB DB DDBD DDBD DBB DD DBDBBS এই বিপ্লবের ইতিহাসে ব্ৰাহ্মণপক্ষ বশিষ্ঠ নামটিকে ও ক্ষত্রিয়পক্ষ বিশ্বামিত্র নামটিকে আশ্রয় করিয়াছে। পূর্বেই বলিয়াছি ব্ৰাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় মাত্রই যে পরস্পরের বিরুদ্ধদলে যোগ দিয়াছে তাহা নহে। এমন অনেক রাজা ছিলেন র্যাহারা ব্ৰাহ্মণদের সপক্ষে ছিলেন। কথিত আছে ব্ৰাহ্মণের বিদ্যা বিশ্বামিত্রের দ্বারা পীড়িত হইয়া রোদন করিতেছিল, হরিশ্চন্দ্র তাহাদিগকে রক্ষা করিতে উদ্যত হইয়াছিলেন ; অবশেষে রাজ্য সম্পদ সমস্ত হারাইয়া বিশ্বামিত্রের কাছে তঁহাকে সম্পূর্ণ হার মানিতে হইয়াছিল। এরূপ দৃষ্টান্ত আরো আছে। প্রাচীনকালের এই মহাবিপ্লবের আর যে-একজন প্রধান নেতা শ্ৰীকৃষ্ণ কর্মকাণ্ডের নিরর্থকতা হইতে সমাজকে মুক্তি দিতে দাড়াইয়াছিলেন তিনি একদিন পাণ্ডবদের সাহায্যে জরাসন্ধকে বধ করেন। সেই জরাসন্ধ রাজা তখনকার ক্ষত্রিয়দলের শত্রুপক্ষ ছিলেন । তিনি বিস্তর ক্ষত্ৰিয় রাজাকে বন্দী ও পীড়িত করিয়াছিলেন। ভীমাৰ্জ্জুনকে লইয়া শ্ৰীকৃষ্ণ যখন র্তাহার পূরমধ্যে প্রবেশ করিলেন তখন তাহাদিগকে ব্ৰাহ্মণের ছদ্মবেশ ধরিতে হইয়াছিল। এই ব্ৰাহ্মণ-পক্ষপাতী ক্ষত্রবিদ্বেষী রাজাকে শ্ৰীকৃষ্ণ পাণ্ডবদের দ্বারা যে বধ করিয়াছিলেন এটা একটা খাপছাড়া ঘটনামাত্র নহে। শ্ৰীকৃষ্ণকে লইয়া তখন দুই দল হইয়াছিল। সেই দুই দলকে সমাজের মধ্যে এক করিবার চেষ্টায় যুধিষ্ঠির যখন রাজসূয় যজ্ঞ করিয়াছিলেন তখন শিশুপাল বিরুদ্ধদলের মুখপাত্র হইয়া শ্ৰীকৃষ্ণকে অপমান করেন। এই যজ্ঞে সমস্ত ব্ৰাহ্মণ ও ক্ষত্ৰিয়, সমস্ত আচার্য ও রাজার মধ্যে শ্ৰীকৃষ্ণকেই সর্বপ্রধান বলিয়া অর্ঘ্য দেওয়া হইয়াছিল। এই যজ্ঞে তিনি ব্ৰাহ্মণের পদক্ষালনের জন্য নিযুক্ত ছিলেন। পরবর্তীকালের সেই অত্যুক্তির প্রয়াসেই পুরাকালীন ব্ৰাহ্মণ-ক্ষত্ৰিয় বিরোধের ইতিহাস স্পষ্ট দেখা যায়। কুরুক্ষেত্রযুদ্ধের গোড়ায় এই সামাজিক বিবাদ । তাহার এক দিকে শ্ৰীকৃষ্ণের পক্ষ, অন্য দিকে শ্ৰীকৃষ্ণের বিপক্ষ। বিরুদ্ধপক্ষে সেনাপতিদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন ব্ৰাহ্মণ দ্রোণ— কৃপ ও অশ্বথামাও বড়ো সামান্য ছিলেন না। BB DB BDBSBDD DBB D DBBDBDD DD DDB D BB sD সমাজবিপ্লব। অর্থাৎ সমাজের ভিতরকার পুরাতন ও নূতনের বিরোধ। রামায়ণের কালে রামচন্দ্র নূতন দলের পক্ষ লইয়াছিলেন তাহা স্পষ্ট দেখা যায়। বশিষ্ঠের সনাতন ধর্মই ছিল রামের কুলধৰ্ম, বশিষ্ঠবিংশই ছিল তাহাদের চিরপুরাতন পুরোহিত্যুবংশ, তথাপি অল্পবয়সেই রামচন্দ্র সেই বশিষ্ঠের বিরুদ্ধপক্ষ বিশ্বামিত্রের অনুসরণ করিয়াছিলেন। বস্তুত বিশ্বামিত্র রামকে তঁহার পৈতৃক অধিকার হইতে ছিনাইয়া লইয়াছিলেন। রাম যে পন্থা লইয়াছিলেন তাহাতে দশরথের সম্মতি ছিল না, কিন্তু বিশ্বামিত্রের প্রবল প্রভাবের কাছে তাহার আপত্তি টিকিতে পারে নাই। পরবর্তীকালে এই কাব্য যখন জাতীয়সমাজে বৃহৎ ইতিহাসের স্মৃতিকে কোনাে এক রাজবংশের পারিবারিক ঘরের কথা করিয়া আনিয়াছিল তখনই দুর্বলচিত্ত বৃদ্ধ রাজার অদ্ভুত স্ত্ৰৈণতাকেই রামের বনবাসের কারণ বলিয়া ঘটাইয়াছে। রামচন্দ্ৰ যে নব্যপন্থা গ্ৰহণ করিয়াছিলেন ইতিহাসে তাহার আর-এক প্রমাণ আছে। একদা যে ব্ৰাহ্মণ ভৃগু বিষ্ণুর বক্ষে পদাঘাত করিয়াছিলেন। তঁহারই বংশোদ্ভব পরশুরামের ব্রত ছিল ক্ষত্রিয়বিনাশ। রামচন্দ্র ক্ষত্ৰিয়ের এই দুর্ধর্ষ শক্রকে নিরস্ত্ৰ করিয়াছিলেন। এই নিষ্ঠুর ব্রাহ্মণবীরকে বধ না করিয়া তিনি তঁহাকে যে বশ করিয়াছিলেন তাহাতে অনুমান করা যায়, ঐক্যসাধনাত্ৰত গ্ৰহণ করিয়ারামচন্দ্র তাহার প্রথম পর্বেই কতক বীর্যবলে কতক ক্ষমাগুণে ব্ৰাহ্মণ-ক্ষত্ৰিয়ের বিরোধভঞ্জন করিয়াছিলেন । রামের জীবনের সকল কার্যেই এই উদার বীর্যবান সহিষ্ণুতার পরিচয় পাওয়া যায়।