পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী बल्कि পিলসুজের উপর পিতলের প্রদীপ, খড়কে দিয়ে উসকে দিচ্ছে থেকে থেকে । হাতির দাতের মতো কোমল সাদা পঙ্খের-কাজ-করা মেজে ; তার উপরে খান-দুয়েক মাদুর পাতা । ছোটো ছেলেরা জড়ো হয়েছি। ঘরের কোণে মিটমিটে আলোয় । বুড়ো মোহন সর্দার কলপ-লাগানো চুল বাবরি করা, মিশকালো রঙ, চোখ দুটাে যেন বেরিয়ে আসছে, হাতের পায়ের হাড়গুলো দীর্ঘ, কণ্ঠস্বর সরু-মোটায় ভাঙা । রোমাঞ্চ লাগাবার মতো তার পূর্ব ইতিহাস । বসেছে আমাদের মাঝখানে, বলছে রোঘো ডাকাতের কথা । আমরা সবাই গল্প আঁকড়ে বসে আছি । দক্ষিণের হাওয়া-লাগা ঝাউডালের মতো দুলছে মনের ভিতরটা । খোলা জানলার সামনে দেখা যায় গলি, একটা হলদে গ্যাসের আলোর খুঁটি দাড়িয়ে আছে একচােখো ভূতের মতো । পথের বা ধারটাতে জমেছে ছায়া । গলির মোড়ে সদর রাস্তায় বেলফুলের মালা হেঁকে গেল মালী । পাশের বাড়ি থেকে কুকুর ডেকে উঠল অকারণে । নটার ঘণ্টা বাজল দেউড়িতে । অবাক হয়ে শুনছি। রোঘোর চরিতকথা । তত্ত্বরত্নের ছেলের পৈতে, ‘নমো নমো করে। সারলে চলবে না ঠাকুর, ভেবো না খরচের কথা ।” মোড়লের কাছে পত্র দেয়। পাচ হাজার টাকা দাবি করে ব্ৰাহ্মণের জন্যে ।