পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬২ রবীন্দ্র-রচনাবলী এ বাশির রন্ধে রন্ধে ; যে-বিরাট গৃঢ় অহুভবে রজনীর অঙ্গুলিতে অক্ষমালা ফিরিছে নীরবে আলোকবন্দনামস্ত্র জপে— আমার বঁশিরে রাখি আপন বক্ষের পরে, তারে আমি পেয়েছি একাকী হৃদয়কম্পনে মম ; যে বন্দী গোপন গন্ধখানি কিশোরকোরক মাঝে স্বপুস্বর্গে ফিরিছে সন্ধানি পুজার নৈবেদ্যডালি, সংশয়িত তাহার বেদন সংগ্রহ করেছে গানে আমার বঁাশরি কলস্বনা। চেতনাসিন্ধুর ক্ষুব্ধ তরঙ্গের মৃদঙ্গগর্জনে নটরাজ করে নৃত্য, উন্মুখর অট্টহাস্যসনে অতল অশ্রীর লীলা মিলে গিয়ে কলরলরোলে উঠিতেছে রণি রণি, ছায়ারৌদ্র সে-দোলায় দোলে অশ্রান্ত উল্লোলে। আমি তীরে বসি তারি রুদ্রতালে গান বেঁধে লভিয়াছি আপন ছন্দের অন্তরালে অনন্তের আনন্দবেদনা। নিখিলের অনুভূতি সংগীতসাধনা মাঝে রচিয়াছে অসংখ্য আকুতি । এই গীতিপথপ্রাস্তে হে মানব, তোমার মন্দিরে দিনান্তে এসেছি আমি নিশীথের নৈঃশব্যের তীরে আরতির সান্ধ্যক্ষণে ; একের চরণে রাখিলাম বিচিত্রের নর্মবাশি,– এই মোর রহিল প্রণাম । ৬ এপ্রিল ১৯৩১ শান্তিনিকেতন