পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রক্তকরবী এই নাট্যব্যাপার যে-নগরকে আশ্রয় করিয়া আছে তাহার নাম যক্ষপুরী । এখানকার শ্রমিকদল মাটির তলা হইতে সোনা তুলিবার কাজে নিযুক্ত। এখানকার রাজা একটা অত্যন্ত জটিল আবরণের আড়ালে বাস করে। প্রাসাদের সেই জালের আবরণ এই নাটকের একটিমাত্র দৃত। সেই আবরণের বহির্ভাগে সমস্ত ঘটনা নন্দিনী ও কিশোর, সুড়ঙ্গ-খোদাইকর বালক কিশোর। নন্দিনী, নন্দিনী, নন্দিনী ! মন্দিনী । আমাকে এত করে ডাকিস কেন, কিশোর। আমি কি শুনতে পাই নে । কিশোর। শুনতে পাস জানি, কিন্তু আমার-যে ডাকতে ভালো লাগে । আর ফুল চাই তোমার ? তাহলে আনতে যাই । নন্দিনী। যা যা, এখনি কাজে ফিরে যা, দেরি করিস নে । কিশোর। সমস্তদিন তো কেবল সোনার তাল খুড়ে আনি, তার মধ্যে একটু সময় চুরি করে তোর জন্যে ফুল খুজে আনতে পারলে বেঁচে যাই । নন্দিনী । ওরে কিশোর, জানতে পারলে-যে ওরা শাস্তি দেবে। কিশোর। তুমি-যে বলেছিলে, রক্তকরবী তোমার চাই-ই চাই। আমার আনন্দ এই যে, রক্তকরবী এখানে সহজে মেলে না। অনেক খুঁজেপেতে একজায়গায় জঞ্জালের পিছনে একটিমাত্র গাছ পেয়েছি। নন্দিনী। আমাকে দেখিয়ে দে, আমি নিজে গিয়ে ফুল তুলে আনিব । কিশোর। অমন কথা বোলো না । নন্দিনী, নিষ্ঠুর হয়ে না। ওই গাছটি থাক আমার একটিমাত্র গোপন কথার মতো। বিশু তোমাকে গান শোনায়, সে তার নিজের গান। এখন থেকে তোমাকে আমি ফুল জোগাব, এ আমারই নিজের ফুল।