পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রক্তকরবী ৩৬৩ ভার আমাকেই নিতে হচ্ছে। প্রভুপাদ বরঞ্চ ওপাড়ায় নাম শুনিয়ে আমুন, সেখানে করাতীরা যেন একটু খিটখিট শুরু করছে। গোসাই। কোন পাড়া বললে, সর্দারবাবা । সর্দার। ওই-যে ট ঠ পাড়ায়। সেখানে ৭১ ট হচ্ছে মোড়ল মুর্ধন্য-ণয়ের ৬৫ যেখানে থাকে তার বঁায়ে ওই পাড়ার শেষ । গোঁসাই। বাবা, দস্ত্য-ন পাড়া যদিও এখনো নড় নড় করছে, মূর্ধন্ত্য-ণরা ইদানীং অনেকটা মধুর রসে মজেছে । মন্ত্র নেবার মতে কান তৈরি হল ব'লে। তবু আরো ক’টা মাস পাড়ায় ফৌজ রাখা ভালো। কেননা, নাহংকারাৎ পরে রিপুঃ । ফৌজের চাপে অহংকারটার দমন হয়, তার পরে আমাদের পালা। তবে আসি । চন্দ্র। প্রভু, আশীৰ্বাদ করো, এই এদের যেন সুমতি হয়। অপরাধ নিয়ে না। গোসাই । ভয় নেই মা-লক্ষ্মী, এরা সম্পূর্ণ ঠাণ্ড হয়ে যাবে। [ প্রস্থান সর্দার। ওহে ৬৯ ঙ, তোমাদের ওপাড়ার মেজাজটা যেন কেমন দেখছি ! বিশু। তা হতে পারে। গোসাইজি এদের কুৰ্ম-অবতার বললেন, কিন্তু শাস্ত্রমতে অবতারের বদল হয়। কুর্ম হঠাৎ বরাহ হয়ে ওঠে, বর্মের বদলে বেরিয়ে পড়ে দন্ত, ধৈর্যের বদলে গো । চন্দ্র। বিশুবেয়াই, একটু থামে। সর্দারদাদা, আমার দরবারটা ভুলো না । সর্দার। কিছুতেই না । শুনে রাখলুম, মনেও রাখব। [ প্রস্থান চন্দ্রা । আহা দেখলে ? সর্দার লোকটি কী সরেস । সবার সঙ্গেই হেসে কথা । বিশু । মকরের দাতের শুরুতে হাসি, অস্তিমে কামড় । চন্দ্রা। কামড়টা এর মধ্যে কোথায় ! বিশু। জান না, ওরা ঠিক করেছে এবার থেকে এখানে কারিগরের সঙ্গে তাদের স্ত্রীরা আসতে পারবে না ? চন্দ্রা । কেন । বিশু। সংখ্যারূপে ওদের হিসাবের খাতায় আমরা জায়গা পাই, কিন্তু সংখ্যার অঙ্কের সঙ্গে নারীর অঙ্ক গণিতশাস্ত্রের যোগে মেলে না। চন্দ্র। ওমা ! ওদের নিজের ঘরে কি স্ত্রী নেই। তারা কী বলে। বিশু। তারাও সোনার তালের মদে বেহু শ । নেশায় স্বামীদের ছাড়িয়ে যায়। আমরা তাদের চোখেই পড়ি নে । চন্দ্র। বিগুবেয়াই, তোমার ঘরে তো স্ত্রী ছিল, তার হল কী । অনেকদিন খবর পাই নি ।