পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রক্তকরবী ; Wory নন্দিনী। এই যদি মানুষের হওয়ার রাস্ত হয়, তা-হলে চাই নে আমি হওয়া— আমি ওই ছায়াদের সঙ্গে চলে যাব, আমাকে রাস্তা দেখিয়ে দাও । অধ্যাপক। রাস্তা দেখাবার দিন এলে এরাই দেখাবে, তার আগে রাস্তা ব’লে কোনো বালাই নেই। দেখো-না, পুরাণবাগীশ আস্তে আস্তে কখন সরে পড়েছেন, ভেবেছেন পালিয়ে বঁাচবেন। একটু এগোলেই বুঝবেন বেড়াজাল এখান থেকে শুরু করে বহু যোজন দূর পর্যন্ত খুটিতে খুটিতে বাধা। নন্দিনী, রাগ করছ তুমি । তোমার কপোলে রক্তকরবীর গুচ্ছ আজ প্রলয়গোধূলির মেঘের মতো দেখাচ্ছে। নন্দিনী । ( জানলা ঠেলে ) শোনো, শোনো ! অধ্যাপক। কাকে ডাকছ তুমি। নন্দিনী। জালের কুয়াশায় ঢাকা তোমাদের রাজাকে । অধ্যাপক । ভিতরকার কপাট পড়ে গেছে, ডাক শুনতে পাবে না । নন্দিনী । বিশুপাগল, পাগলভাই ! অধ্যাপক । তাকে ডাকছ কেন । নন্দিনী । এখনো-যে সে ফিরল না। আমার ভয় করছে। অধ্যাপক। একটু আগেই তোমার সঙ্গেই তো দেখেছি। নন্দিনী । সর্দার বললে, রঞ্জনকে চিনিয়ে দেবার জন্যে তার ডাক পড়েছে। সঙ্গে যেতে চাইলুম, দিলে না – ও কিসের আর্তনাদ । অধ্যাপক। এ বোধ হচ্ছে সেই পালোয়ানের । নন্দিনী । কে সে । অধ্যাপক। সেই-যে জগদ্বিখ্যাত গৰ্জ্জু, যার ভাই ভজন স্পর্ধা করে রাজার সঙ্গে কুস্তি করতে এল, তার পরে তার লঙোটির একটা ছেড়া স্থতে কোথাও দেখা গেল না। সেই রাগে গজ্জ্ব এল তাল ঠুকে । ওকে গোড়াতেই বলেছিলুম, এ-রাজ্যে সুড়ঙ্গ খুদতে চাও তো এসো, মরতে-মরতেও কিছুদিন বেঁচে থাকবে। আর যদি পৌরুষ দেখাতে চাও তো একমুহূর্ত সইবে না। এ বড়ো কঠিন জায়গা ।” নন্দিনী । দিনরাত এই মাহুষধরা’ফাদের খবরদারি করে এরা একটুও কি ভালো থাকে । r- ** অধ্যাপক । ভালোর কথাটা এর মধ্যে নেই, থাকার কথাটাই আছে। এদের সেই থাকাটা এত ভয়ংকর বেড়ে গেছে যে লাখো-লাখো মামুষের উপর চাপ না দিলে এদের ভার সামলাবে কে ? জাল তাই বেড়েই চলেছে । ওদের যে থাকতেই 》t (: