পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'లఘ్ e রবীন্দ্র-রচনাবলী সর্দার। না না, কোনোদিন তোমার নাম করতেও তাকে শুনি নি। মোড়ল। সেই তো ওর চালাকি। যে-মানুষ নামজাদা তার নাম চাপা দিয়েই তো তাকে মারতে হয়। কৌশলে ইশারায় লাগালাগি করা তো ভালো নয়। ওই রোগটি আছে আমাদের তেত্রিশের । তার তো দেখি আর-কোনো কাজ নেই, যখন-তখন প্রভুদের খাসমহলে যাওয়া-আসা চলছেই। ভয় হয়, কার নামে কী বানিয়ে বসে। অথচ ওঁর নিজের ঘরের খবরটি যদি— সর্দার। আজ আর সময় নেই, শিগগির যাও। মোড়ল। তবে প্রণাম হই । ( ফিরে এসে ) একটি কথা, ওপাড়ার অষ্ট-আশি সেদিন মাত্র তিরিশ তনথায় কাজে ঢুকল, দুটো বছর না যেতেই উপরিপাওনা ধরে ওর আয় আজ কিছু না হবে তো মাসে হাজার-দেড়হাজার তো হবেই। প্রভুদের সাদা মন, দেবতার মতো ফাকা স্তবেই ভোলেন। সাষ্টাঙ্গে প্রণামের ঘটা দেখেই— সর্দার । আচ্ছা আচ্ছা, সে-কথা কাল হবে । মোড়ল । আমার তো দয়াধৰ্ম আছে, আমি তার রুটি মারার কথা বলি নে ; কিন্তু তাকে খাতাঞ্চিখানায় রাখাটা ভালো হচ্ছে কিনা ভেবে দেখবেন । আমাদের বিষ্ণুদত্ত তার নাড়ীনক্ষত্র জানে। তাকে ডাকিয়ে নিয়ে— সর্দার। আজই ডাকাব, তুমি যাও । মোড়ল। প্রভু, আমার সেজে ছেলে লায়েক হয়ে উঠেছে। প্রণাম করতে এসেছিল, তিন দিন হাটাইটি করে দর্শন না পেয়ে ফিরে গেছে। বড়োই মনের দুঃখে আছে। প্রভুর ভোগের জন্যে আমার বধুমাতা নিজের হাতে তৈরী ছাচিকুমড়োর— সর্দার। আচ্ছা, পরশু আসতে বোলো, দেখা মিলবে । [ মোড়লের প্রস্থান মেজো সর্দারের প্রবেশ মেজো সর্দার । নাচওয়ালী আর বাজনদারদের বাগানে রওনা করে দিয়ে এলুম। সর্দার। আর, রঞ্জনের সেটা কত দুর— মেজো সর্দার। এ-সব কাজ আমার দ্বারা হয় না । ছোটো সর্দার নিজে পছন্দ করে ভার নিয়েছে। এতক্ষণে তার— সর্দার । রাজা কি— মেজো সর্দার। রাজা নিশ্চয় বুঝতে পারেন নি। দশজনের সঙ্গে মিশিয়ে তাকে –কিন্তু রাজাকে এরকম ঠকানো আমি তো কর্তব্য মনে করি নে।