পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రీసె త్రి রবীন্দ্র-রচনাবলী নেপথ্যে । নন্দিনী, আমার কাছ থেকে তুমি প্রশ্রয় পেয়েছ, তাই ভয় কর না । আজ ভয় করতেই হবে । নন্দিনী । আমি চাই, সবাইকে যেমন ভয় দেখিয়ে বেড়াও, আমাকেও তেমনি ভয় দেখাবে। তোমার প্রশ্রয়কে ঘৃণা করি । * নেপথ্যে। ঘৃণা কর ? স্পর্ধ চূর্ণ করব। তোমাকে আমার পরিচয় দেবার সময় এসেছে। , i নন্দিনী । পরিচয়ের অপেক্ষাতেই আছি, খোলো দ্বার। ( দ্বার উদঘাটন ) ওকি ! ওই কে পড়ে। রঞ্জনের মতো দেখছি যেন! রাজা। কী বললে । রঞ্জন ? কখনোই রঞ্জন নয়। নন্দিনী । হা গো, এই তো আমার রঞ্জন । রাজা । ও কেন বললে না ওর নাম । কেন এমন স্পর্ধা করে এল । নন্দিনী । জাগো রঞ্জন, আমি এসেছি তোমার সর্থী। রাজা, ও জাগে না কেন । রাজা । ঠকিয়েছে। আমাকে ঠকিয়েছে এরা । সর্বনাশ ! আমার নিজের যন্ত্র আমাকে মানছে না। ডাক তোরা, সর্দারকে ডেকে আন, বেঁধে নিয়ে আয় তাকে । নন্দিনী । রাজা, রঞ্জনকে জাগিয়ে দাও, সবাই বলে তুমি জাদু জান, ওকে জাগিয়ে দাও । রাজা । আমি যমের কাছে জাদু শিখেছি, জাগাতে পারি নে। জাগরণ ঘুচিয়ে দিতেই পারি। নন্দিনী। তবে আমাকে ওই ঘুমেই ঘুম পাড়াও । আমি সইতে পারছি নে । কেন এমন সর্বনাশ করলে । রাজা । আমি যৌবনকে মেরেছি— এতদিন ধরে আমি সমস্ত শক্তি নিয়ে কেবল যৌবনকে মেরেছি। মরা-যৌবনের অভিশাপ আমাকে লেগেছে। নন্দিনী । ও কি আমার নাম বলে নি । রাজা। এমন করে বলেছিল, সে আমি সইতে পারি নি। হঠাৎ আমার নাড়ীতে নাড়ীতে যেন আগুন জলে উঠল। নন্দিনী । ( রঞ্জনের প্রতি ) বীর আমার, নীলকণ্ঠপাখির পালক এই পরিয়ে দিলুম তোমার চুড়ায় । তোমার জয়যাত্রা আজ হতে শুরু হয়েছে। সেই যাত্রার বাহন আমি।— আহ, এই-ষে ওর হাতে সেই আমার রক্তকরবীর মঞ্জরি। তবে তো কিশোর ওকে দেখেছিল। সে কোথায় গেল। রাজা, কোথায় সেই বালক । রাজা। কোন বালক।