পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"為b" রবীন্দ্র-রচনাবলী রাজা । কী হয়েছে তোমাদের। কী করতে বেরিয়েছ । ফাগুলাল । বন্দীশালার দরজা ভাঙতে, মরি তৰু ফিরব না। রাজা। ফিরবে কেন । ভাঙার পথে আমিও চলেছি। ওই তার প্রথম চিহ্ন । আমার ভাঙা ধ্বজ, আমার শেষ কীর্তি । ফাগুলাল। নন্দিন, ভালো বুঝতে পারছি নে। আমরা সরল মানুষ, দয়া করে, আমাদের ঠকিয়ে না। তুমি-যে আমাদেরই ঘরের মেয়ে । নন্দিনী । ফাগুভাই, তোমরা তো মৃত্যুকেই পণ করেছ, ঠকবার তো কিছুই বাকি রাখলে না । ফাগুলাল । নন্দিন, তুমিও তবে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে চলো । নন্দিনী । অামি তো সেইজন্যেই বেঁচে অাছি । ফাগুলাল, আমি চেয়েছিলুম রঞ্জনকে তোমাদের সকলের মধ্যে আনতে । ওই দেখো, এসেছে আমার বীর, মৃত্যুকে তুচ্ছ ক’রে । ফাগুলাল । সর্বনাশ ! ওই কি রঞ্জন ! নিঃশব্দ পড়ে আছে ! নন্দিনী । নিঃশব্দ নয়। মৃত্যুর মধ্যে তার অপরাজিত কণ্ঠস্বর আমি-যে এই শুনতে পাচ্ছি। রঞ্জন বেঁচে উঠবে— ও কখনো মরতে পারে না। ফাগুলাল। হায় রে নন্দিনী, সুন্দরী আমার! এইজন্যই কি তুমি এতদিন অপেক্ষা করে ছিলে আমাদের এই অন্ধ নরকে । নন্দিনী । ও আসবে বলে অপেক্ষা করে ছিলুম, ও তো এল । ও আবার আসার জন্যে প্রস্তুত হব, ও আবার আসবে।— চন্দ্রা কোথায়, ফাগুলাল । ফাগুলাল। সে গেছে গোকুলকে নিয়ে সর্দারের কাছে কাদাকাটি করতে । সর্দারের পরে তাদের অগাধ বিশ্বাস – কিন্তু মহারাজ, ভুল বোঝ নি তো ? আমরা তোমারি বন্দীশালা ভাঙতে বেরিয়েছি । রাজা। হা, আমারি বন্দীশালা । তোমাতে আমাতে দুজনে মিলে কাজ করতে হবে । একলা তোমার কাজ নয় । ফাগুলাল । সর্দাররা খবর পেলেই ঠেকাতে আসবে। রাজা । তাদের সঙ্গে আমার লড়াই । ফাগুলাল । সৈন্যেরা তো তোমাকে মানবে না। রাজা । একলা লড়ব, সঙ্গে তোমরা আছে । ফাগুলাল। জিততে পারবে ? • রাজা। মরতে তো পারব। এতদিনে মরবার অর্থ দেখতে পেয়েছি— বেঁচেছি। ফাগুলাল। রাজা, শুনতে পাচ্ছ গর্জন ?