পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন 8ማማ যদ্ভদ্রং তন্ন আস্থব— যা ভালো তাই আমাদের দাও। মানুষের পক্ষে এ প্রার্থনা অত্যন্ত কঠিন প্রার্থনা । কেননা মানুষ যে দ্বন্দ্বের জীব— ভালো যে মানুষের পক্ষে। সহজ নয়। তাই, যদ্ভদ্রং তন্ন আস্থব, এ আমাদের ত্যাগের প্রার্থনা, দুঃখের প্রার্থনা— নাড়ীছেদনের প্রার্থনা । পিতার কাছে এই কঠোর প্রার্থনা মানুষ ছাড়া আর-কেউ করতে পারে না । পিতানোহসি, পিতা নো বোধি, নমস্তেহস্তু— যজুর্বেদের এই মন্ত্রটি নমস্কারের প্রার্থনা । তুমি আমাদের পিতা, তোমাকে আমাদের পিতা বলে যেন বুঝি এবং তোমাতে আমাদের নমস্কার যেন সত্য হয় । অর্থাৎ আমার দিকেই সমস্ত টানবার যে একটা প্রবৃত্তি আছে, সেটাকে নিরস্ত করে দিয়ে তোমার দিকেই সমস্ত যেন নত করে সমর্পণ করে দিতে পারি। তা হলেই যে দ্বন্দ্বের অবসান হয়ে যায়— আমার যেখানে সার্থকতা সেইখানেই পৌছতে পারি। সেখানে যে পৌঁচেছি সে কেবল তোমাকে নমস্কারের দ্বারাই চেনা যায় ;— সেখানে কোনো অহংকার টিকতেই পারে না— ধনী সেখানে দরিত্রের সঙ্গে তোমার পায়ের কাছে এসে মেলে, তত্ত্বজ্ঞানী সেখানে মূঢ়ের সঙ্গেই তোমার পায়ের কাছে এসে নত হয় ;– মানুষের দ্বন্দ্বের যেখানে অবসান সেখানে তোমাকে পরিপূর্ণ নমস্কার, অহংকারের একান্ত বিসর্জন । এই নমস্কারটি কেমন নমস্কার ?— নমঃ শস্তবায় চ ময়োভবায় চ, নমঃ শঙ্করায় চ ময়স্করায় চ, নমঃ শিবায় চ শিবতরায় চ। যিনি সুখকর তাকেও নমস্কার, যিনি মঙ্গলকর তাকেও নমস্কার ; যিনি সুখের আকর তাকেও নমস্কার, যিনি মঙ্গলের অাকর র্তাকেও নমস্কার ; যিনি মঙ্গল তাকে নমস্কার, যিনি চরমমঙ্গল তাকে নমস্কার । সংসারে পিতা ও মাতার ভেদ আছে কিন্তু বেদের মস্ত্রে র্যাকে পিতা ব’লে নমস্কার করছে, তার মধ্যে পিতা ও মাত দুইই এক হয়ে আছে। তাই তাকে কেবল পিত বলেছে। সংস্কৃতসাহিত্যে দেখা গেছে, পিতরে বলতে পিতা ও মাতা উভয়কেই একত্রে বুঝিয়েছে। মাতা পুত্রকে একান্ত করে দেখেন— তার পুত্র তার কাছে আর-সমস্তকে অতিক্রম করে থাকে। এইজন্যে তাকে দেখাশোনা, তাকে খাওয়ানো পরানো সাজানো মাচানো, তাকে স্বধী করানোতেই মা মুখ্যভাবে নিযুক্ত থাকেন। গর্তে সে যেমন S t|\OS W