পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহজ পাঠ 8 V6 মাটিতে। পান্ধী হালকা কাঠের তৈরি; বিশ্বম্ভরবাবুর দেহটি স্কুল। আর উপায় নেই, এইখানেই রাত্রি কাটাতে হবে। ডাক্তারবাবু ঘাসের উপর কম্বল পাতালেন, লণ্ঠনটি রাখলেন। কাছে। শাস্তুকে নিয়ে গল্প করতে লাগলেন। এমন সময় বেহারাদের সর্দার বুদ্ধ এসে বললে, “ঐ-যে কারা আসছে, ওরা ডাকাত সন্দেহ নেই।” বিশ্বম্ভরবাবু বললেন, “ভয় কী, তোরা তো সবাই আছিস।” বুদ্ধ বললে, “বন্ধু পালিয়েছে, পলুকেও দেখছি নে। বক্সি লুকিয়েছে ঐ ঝোপের মধ্যে। ভয়ে বিষ্ণুর হাত-পা আড়ষ্ট।” শুনে ডাক্তার ভয়ে কম্পিত। ডাকলেন, “শাস্তু।” শ্বস্তু বললে, “আজ্ঞে!!” ডাক্তার বললেন, “এখন উপায় কী ?” শাস্তু বললে, “ভয় নেই, আমি আছি।” ডাক্তার বললেন, “ওরা-যে পাচ জন।” শাস্তু বললে, “আমি যে শাস্তু।” এই ব’লে উঠে দাড়িয়ে এক লম্ফ দিলে, গর্জন করে বললে, “খবরদার!” ডাকাতরা অট্টহাস্য ক’রে এগিয়ে আসতে লাগিল । তখন শাস্তু পান্ধীর সেই ভাঙা ডাণ্ডাখানা তুলে নিয়ে ওদের দিকে ছুড়ে মারলে। তারি এক ঘায়ে তিন জন একসঙ্গে পড়ে গেল। তার পরে শাস্তু লাঠি ঘুরিয়ে যেই ওদের মধ্যে ঝাপিয়ে পড়লো বাকি দুজনে দিল দৌড়। তখন ডাক্তারবাবু ডাকলেন, “শাস্তু!” শাস্তু বললে, “আজ্ঞে!!” বিশ্বম্ভরবাবু বললেন, “এইবার বাক্সটা বের করো।” শম্ভ বললে, “কেন, বাক্স নিয়ে কী হবে ?” ডাক্তার বললেন, “ঐ তিনটে লোকের ডাক্তারী করা চাই। ব্যান্ডেজ বাধতে হবে।” রাত্রি তখন অল্পই বাকি। বিশ্বম্ভরবাবু আর শাস্তু দুজনে মিলে তিন জনের শুশ্রুষা করলেন। সকাল হয়েছে। ছিন্ন মেঘের মধ্যে দিয়ে সূর্যের রশ্মি ফেটে পড়ছে। একে একে সব বেহারা ফিরে আসে। বন্ধু এল, পল্প এল. বক্সির হাত ধরে এল বিষ্ণু, তখনো তার হৃৎপিণ্ড কম্পমান। স্টীমার আসিছে ঘাটে, পড়ে আসে বেলা, এলো দূর দেশ হতে; বৎসরের পরে ফিরে আসে যে-যাহার আপনার ঘরে। জাহাজের ছাদে ভিড়; নানা লোকে নানা মাদুরে কম্বলে লেপে পেতেছে বিছানা ঠেসাঠেসি ক’রে। তারি মাঝে হারেরাম মাথা নেড়ে বাজাইছে হারমোনিয়াম। বোঝা আছে কত শত- বাক্স কত রাপ টিন বেত চামড়ার, পুঁটুলির স্তুপ, থলি বুলি ক্যাম্বিশের, ডালা ঝুড়ি ধামা সবজিতে ভরা। গায়ে রেশমের জামা, কোমরে চাদর বাধা, চণ্ডী অবিনাশ কলিকাতা হতে আসে, বন্ধু শ্যামদাস S wo