পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তিন সঙ্গী । ২৪১ ইতিমধ্যে ওই হার হস্তান্তরকর যদি, তবে ফাকি দেবে আমাকে ।” 的 “গয়নাগুলো মা দিয়ে গেছেন আমার ভাবী বিবাহের যৌতুক। বিবাহট বাদ দিলে" ও গয়নার কী সংজ্ঞা দেব । যাই হোক, কোনো শুভ কিংবা অশুভ লগ্নে এই কন্যাটির সালংকার মূর্তি আশা কোরো না।” “অন্যত্র পাত্র স্থির হয়ে গেছে বুঝি ?” “হয়েছে বৈতরণীর তীরে। বরঞ্চ এক কাজ করতে পারি, তুমি যাকে বিয়ে করবে সেই বধূর জন্যে আমার এই গয়না কিছু রেখে যাব।” * “আমার জন্যে বুঝি বৈতরণীর তীরে বধূর রাস্ত নেই ?” “ও কথা বোলে না। সজীব পাত্রী সব অঁাকড়ে আছে তোমার কুঠি ।” “মিথ্যে কথা বলব না। কুষ্টির ইশারাটা একেবারে অসম্ভব নয়। শনির দশায় সঙ্গিনীর অভাব হঠাৎ মারাত্মক হয়ে উঠলে, পুরুষের আসে ফীড়ার দিন ।” “তা হতে পারে, কিন্তু তার কিছুকাল পরেই সঙ্গিনীর আবির্ভাবটাই হয় মারাত্মক । তখন ওই ফাড়াট হয়ে ওঠে মুশকিলের। যাকে বলে পরিস্থিতি।” “ওই যাকে বলে বাধ্যতামূলক উদ্ববন্ধন। প্রসঙ্গটা যদিচ হাইপথেটিক্যাল, তবু সম্ভাবনার এত কাছঘেঁষা যে এ নিয়ে তর্ক করা মিথ্যে । তাই বলছি, একদিন যখন লালচেলি-পর। অামাকে হঠাৎ দেখবে পরহস্তগতং ধনং তখন—”

  • আর ভয় দেখিয়ে না, তখন আমিও হঠাৎ আবিষ্কার করব, পরহস্তের অভাব নেই।”

“ছি ছি মধুকরী, কথাটা তো ভালো শোনাল না তোমার মুখে । পুরুষের তোমাদের দেবী বলে স্তুতি করে, কেননা তাদের অন্তর্ধান ঘটলে তোমরা শুকিয়ে মরতে রাজি থাক । পুরুষদের ভুলেও কেউ দেবতা বলে না। কেনন অভাবে পড়লেই বুদ্ধিমানের মতে অভাব পূরণ করিয়ে নিতে তার প্রস্তুত। সম্মানের মুশকিল তে৷ ওই । একনিষ্ঠতার পদবিটা বাচাতে গিয়ে তোমাদের প্রাণে মরত হয়। সাইকলজি এখন থাক, আমার প্রস্তাব এই, অমরবাবুর অমরত্বলাভের দায়িত্ব আমাদেরই উপরে দাও-না, আমরা কি ওর মূল্য বুঝি নে। গয়না বেচে পুরুষকে লজ্জা দাও কেন।” : “ও কথা বোলো না। পুরুষদের যশ মেয়েদেরই সব চেয়ে বড়ো সম্পদ। যে দেশে তোমরা বড়ো সে দেশে আমরা ধন্য ।” و ، اليا “এ দেশ সেই দেশই হোক। তোমাদের দিকে তাকিয়ে সেই কথাই ভাবি প্রাণপণে । এ প্রসঙ্গে আমার কথাটা এখন থাক, অন্য-এক সময় হবে। অমরবাবুর সফলতায় ঈর্ষা করে এমন খুদে লোক বাংলাদেশে অনেক আছে। এ দেশের