পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী ماهها “রাজকন্যাটি মাটির দরে বিকেবে তা জানি, কিন্তু আমি বেঁচে থাকতে রাজত্ব সস্তায় বিকোবে না।” * “কিন্তু লোকের আমদানি শুরু হয়েছে। সেদিন হঠাৎ দেখি, আমাদেরই অধ্যাপক । মজুমদার ওরই হাত ধরে বেরিয়ে এল সিনেমা থেকে। আমাকে দেখেই ঘাড় বেঁকিয়ে নিল । ছেলেট ভালে ভালো বিষয়ে বক্তৃতা দিয়ে বেড়ায়, দেশের মঙ্গলের দিকে ওর বুলি খুব সহজে খেলে। কিন্তু সেদিন ওর বাক ঘাড় দেখে স্বদেশের জন্যে ভাবন হল ।” “চৌধুরীমশায়, আগল ভেঙেছে।” “ভেঙেছে বই কি। এখন এই গরিবকেই নিজের ঘটিবাটি সামলাতে হবে।” । "মজুমদার-পাড়ায় মড়ক লাগে লাগুক, আমার ভয় রেবতীকে নিয়ে।” চৌধুরী বললেন, “আপাতত ভয় নেই। খুব ডুবে আছে। কাজ করছে খুব চমৎকার ।” d “চৌধুরীমশায়, ওর বিপদ হচ্ছে সায়ান্সে ও যত বড়ে ওস্তাদই হোক, তুমি যাকে মেট্রিয়ার্কি বল সে রাজ্যের ও ঘোর আনাড়ি।” ' ' ' “সে কথা ঠিক । ওর একবারও টিকে দেওয়া হয় নি। ছোয়াচ লাগলে বাচানে৷ শক্ত হবে।” “রোজ একবার কিন্তু ওকে আপনাকে দেখে যেতে হবে।” “কোথা থেকে ও আবার ছোয়াচ না নিয়ে আসে । শেষকালে এ বয়সে অামি না মরি। ভয় কোরে না, মেয়েমানুষ যদিও, তবুও আশা করি ঠাট্ট বুঝতে পার। আমি পার হয়ে গেছি এপিডেমিকের পাড়াটা। এখন ছোওয়া লাগলেও ছোয়াচ লাগে না। কিন্তু একটা মুশকিল ঘটেছে। পরশু আমাকে যেতে হবে গুজরানওয়ালায়।” । “এটাও ঠাট্ট নাকি । মেয়েমানুষকে দয়া করবেন।” “ঠাট্ট নয়, আমার সতীর্থ অমূল্য আডিড ছিলেন সেখানকার ডাক্তার। বিশপচিশ বছর প্র্যাকটিস করেছেন। কিছু বিষয়সম্পত্তিও জমিয়েছেন। হঠাৎ বিধবা স্ত্রী আর ছেলেমেয়ে রেখে মরেছেন হার্টফেল করে। দেনাপাওনা চুকিয়ে জমিজমা বেচে তাদের উদ্ধার করে আনতে হবে আমাকে । কতদিন লাগবে ঠিক জানি নে ৷”

  • এর উপরে আর কথা নেই।” i “এ সংসারে কথা কিছুরই উপরে নেই সোহিনী। নিৰ্ভয়ে বলে, যা হবেই ত৷ হোক। যার অদৃষ্ট মানে তারা ভূল করে না। আমরা সায়ান্টস্ট রাও বলি অনিবার্যের এক চুল এদিক-ওদিক হবার জো নেই। যতক্ষণ কিছু করবার থাকে করে, ধখন কোনোমতেই পারবে না, বোলে৷ বাস।” ,