পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৩৮ রবীন্দ্র-রচনাবলী । . . ছসাধ্য প্রয়াসের দিনগুলি—সদ নেই, আরাম নেই, ক্লাভি নেই, টুকোথাও ছিদ্র নেই অধ্যবসায়ে। দেখেছি আপনার প্রশস্ত ললাট, আপনার চাপা ঠোঁটে অপরাজেয় ইচ্ছাশক্তির লক্ষণ, আর দেখেছি মানুষকে কী রকম জনায়াসে প্রভুত্বের জোরে চালনা করেন। দাজুর কাছে আমি মানুষ, আমি পুরুষের ভক্ত, যে পুরুষ সত্য যে পুরুষ তপস্বী। সেই পুরুষকেই দেখবার জন্তে আমার ভক্তিপিপাস্থ নারী ভিতরে ভিতরে অপেক্ষ করে ছিল নিজের অগোচরে । মাঝখানে এসেছিল অপদেবতা প্রবৃত্তির টানে। অবশেষে নিষ্কাম পুরুষের স্বৰূঢ় শক্তিরূপ আপনিই আনলেন আমার চোখের সামনে ।” আমি জিগগেস করলুম, “তার পর কি ভাবের পরিবর্তন হয়েছে।” “ই হয়েছে। আপনার বেদি থেকে নেমে এসেছেন প্রতিদিন । স্থানীয় কাগজে পড়লুম, দূরে অন্য-এক জায়গায় সন্ধানের কাজে আপনার ডাক পড়েছে। আপনি নড়লেন না, ভিতরে ভিতরে আত্মগ্লানি ভোগ করলেন । আপনার পথের সামনেকার ঢেলাখানার মতো আমাকে লাথি মেরে ছুড়ে ফেলে দিলেন না কেন। কেন নিষ্ঠুর হতে পারলেন না। যদি পারতেন তবে আমি ধন্ত হতুম। আমার ব্রতের পারণ হত আমার কান্ন দিয়ে।” 擊 মৃদুস্বরে বললুম, “যাবার জন্যেই কাগজপত্তর গুছিয়ে নিচ্ছিলুম।” “না, না, কখনোই না। মিথ্যে ছুতে করে নিজেকে ভোলাচ্ছিলেন। যতই দেখলুম আপনার দুর্বলতা, ভয় হতে লাগল আমার নিজেকে নিয়ে। ছি, ছি, কী পরাভবের বিষ এনেছি নারীর জীবনে, কেবল অন্যের জন্যে নয়, নিজের জন্যেও । ক্রমশই একটা চাঞ্চল্য আমাকে পেয়ে বসল, সে যেন এই বনের বিষনিশ্বাস থেকে। একদিন এখানকার পিশাচী রাত্রি এমন আমাকে আবিষ্ট করে ধরেছিল যে মনে হল যে এত বড়ো প্রবৃত্তি রাক্ষসীও আছে যে আমার দাজুর কাছ থেকেও আমাকে ছিনিয়ে নিতে পারে। তখনই সেই রাত্রেই ছুটে নদীর জলে ঝাপ দিয়ে পড়ে ডুব দিয়ে দিয়ে স্নান করে এসেছি ।” ஆக ior এই কথা বলতে বলতে অচিরা ডাক দিল, “দাদ্ধ।” 喃 অধ্যাপক গাছতলায় বসে পড়ছিলেন। উঠে এসে স্নেহের স্বরে বললেন, “কী দিদি ? দূর থেকে বসে বসে ভাবছিলুম, তোমার উপরে আজ বাণী ভর দিয়েছেন— জল জল করছে তোমার চোখ দুটি ।” 禹 મ , “আমার কথা থাকৃ, তুমি শোনো । তুমি সেদিন বলেছিলে মাহুষের চরম অভিব্যক্তি তপস্তার মধ্য দিয়ে ।” 奮 “禹。