পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারা সরছে তাতে আর একশো ত্রিশ কোটি বছর পরে তাদের পরস্পরের দূরত্ব এখনকার চেয়ে দ্বিগুণ হবে। অর্থাৎ এই পৃথিবীর ভূগঠনের সময়ের মধ্যে নক্ষত্রবিশ্ব আগেকার চেয়ে দ্বিগুণ ফেঁপে গিয়েছে। d শুধু এই নয়, একদল বিজ্ঞানীর মতে এই বস্তুপুঞ্জসংঘটিত বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গে গোলকৰূপী আকাশটাও ৰিস্ফারিত হয়ে চলেছে। এদের মতে আকাশের কোনোএক বিন্দু থেকে সিধে লাইন টানলে সে লাইন অসীমে চলে না গিয়ে ঘুরে এসে এক সময়ে সেই প্রথম বিন্দুতে এসে পৌছয়। এই মত অনুসারে দাড়াচ্ছে এই যে, আকাশগোলকে নক্ষত্ৰজগংগুলি আছে, যেমন আছে পৃথিবী-গোলককে ঘিরে জীবজন্তু গাছপালা। সুতরাং বিশ্বজগৎটার ফেপে-ওঠা সেই আকাশমণ্ডলেরই বিস্ফারণের মাপে। কিন্তু মতের স্থিরত হয় নি এ কথা মনে রাখা উচিত ; আকাশ অসীম, কালও নিরবধি, এই মতটাও মরে নি। আকাশটাও বুদবুদ কি না এই প্রসঙ্গে আমাদের শাস্ত্রের মত এই যে স্বষ্টি চলেছে প্রলয়ের দিকে। সেই প্রলয়ের থেকে আবার নূতন স্বষ্টি উদ্ভাসিত হচ্ছে, ঘুম আর জাগার পালার মতো। অনাদিকাল থেকে কৃষ্টি ও প্রলয়ের পর্যায় দিন ও রাত্রির মতো বারে বারে ফিরে ফিরে আসছে, তার আদিও নেই অন্তও নেই, এই কল্পনাই মনে আনা সহজ। পর্সিয়ুস রাশিতে অ্যালগল নামে এক উজ্জল নক্ষত্র আছে। তার উজ্জ্বলতা স্থির থাকে ষাট ঘণ্ট। তার পরে পাচ ঘণ্টার শেষে তার প্রভা কমে যায় এক-তৃতীয়াংশ। আবার উজ্জল হতে শুরু করে। পাচ ঘণ্ট। পরে পূর্ণ উজ্জলতা পায়, সেই ভরা ঐশ্বৰ্ষ থাকে ষাট ঘণ্টা। এইবুকুম উজ্জলতার কারণ ঘটায় ওর জুড়ি নক্ষত্র। প্রদক্ষিণের সময় ক্ষণে ক্ষণে গ্রহণ লাগে গ্রহণ ছাড়ে। o *আর-একদল তারা আছে তাদের দীপ্তি বাইরের কোনো কারণ থেকে নয়, কিন্তু ভিতরেরই কোনো জোয়ার ভাটায় একবার কমে একবার বাড়ে। কিছুদিন ধরে সমস্ত তারাটা হয়ে যায় বিস্ফারিত, আবার ক্রমে যায় সংকুচিত হয়ে। তার অালোট যেন নাড়ির দব দবানি। সিফিউস নক্ষত্রমণ্ডলীতে এইসব তার প্রথম খুজে পাওয়া গেছে ব’লে এদের নাম হয়েছে সিফাইভস। এদের খোজ পাওয়ার পর থেকে নাক্ষত্ৰজগতের দূরত্ব বের করার একটা মন্ত স্থবিধা হয়েছে। আরও একদল নক্ষত্রের কথা বলবার আছে, তার নাম পেয়েছে নতুন নক্ষত্র। তাদের আলো হঠাৎ অতিক্ৰত উজ্জল হয়ে ওঠে, অনেক হাজার গুণ থেকে অনেক লক্ষ গুণ পর্যন্ত। তার পরে ধীরে ধীরে অত্যন্ত মান হয়ে যায়। এক কালে এই