পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లి.8 i রবীন্দ্র-রচনাবলী তাপে বাতাসের অণু এত বেশি বেগে চঞ্চল হয়ে ওঠে যে বুধগ্রহ তাদের ধরে রাখতে পারে না, তারা দেশ ছেড়ে শূন্যে দেয় দৌড়। বাতাসের অণু পলাতক স্বভাবের। পৃথিবীতে তারা সেকেণ্ডে দুইমাইলমাত্র বেগে ছুটোছুটি করে, তাই টানের জোরে পৃথিবী তাদের সামলিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু যদি কোনো কারণে তাপ বেড়ে উঠে ওদের দৌড় হত সেকেণ্ডে সাত মাইল, তা হলেই পৃথিবী আপন হাওয়াকে আর বশ মানাতে পারত না । i بيده g যে-সব বিজ্ঞানী বিশ্বজগতের হিসাবনবিশ তাদের একটা প্রধান কাজ হচ্ছে গ্ৰহনক্ষত্রের ওজন ঠিক করা। এ কাজে সাধারণ দাড়িপাল্লার ওজন চলে না, তাই কৌশলে ওদের খবর আদায় করতে হয়। সেই কথাটা বুঝিয়ে বলি। মনে করে। একটা গড়ানে গোলা হঠাৎ এসে পথিককে দিলে ধাক্কা, সে পড়ল দশ হাত দূরে। কতখানি ওজনের গোল এসে জোর লাগালে মানুষটা এতখানি বিচলিত হয়, তার নিয়মটা যদি জানা থাকে তা হলে এ দশ হাতের মাপটা নিয়ে গোলাটার ওজন অঙ্ক কষে বের করা যেতে পারে। একবার হঠাৎ এইরকম অঙ্ক কষার সুযোগ ঘটাতে বুধগ্রহের ওজন মাপা সহজ হয়ে গেল। স্থবিধাটা ঘটিয়ে দিলে একটা ধূমকেতু। সে কথাটা বলবার আগে বুঝিয়ে দেওয়া দরকার ধূমকেতুর কী রকম ধরনের জ্যোতিষ্ক। ধূমকেতু শব্দের মানে ধোয়ার নিশান। ওর চেহার দেখে নামটার উৎপত্তি। গোল মুণ্ড আর তার পিছনে উড়ছে উজ্জল একটা লম্বা পুচ্ছ। সাধারণত এই হল ওর আকার। এই পুচ্ছটা অতি স্বল্প বাম্পের। এত স্বল্প যে কখনও কখনও তাকে মাড়িয়ে গিয়েছে পৃথিবী, তবু সেটা অনুভব করতে পারি নি। ওর মুগুটা উল্কাপিণ্ড দিয়ে তৈরি। এখনকার বড়ে বড়ো পণ্ডিতেরা এই মত স্থির করেছেন যে ধূমকেতুর স্বর্ষের বাধ৷ অনুচরেরই দলে। কয়েকটা থাকতে পারে যারা পরিবারভুক্ত নয় যারা আগন্তুক । একবার একটি ধূমকেতুর প্রদক্ষিণপথে ঘটল অপঘাত। বুধের কক্ষপথের পাশ দিয়ে যখন সে চলছিল তখন বুধের সঙ্গে টানাটানিতে তার পথের হয়ে গেল গোলমাল। রেলগাড়ি রেলচু্যত হলে আবার তাকে রেলে ঠেলে তোলা হয় কিন্তু টাইমটেবলের সময় পেরিয়ে যায়। এক্ষেত্রে তাই ঘটল । ধূমকেতুটা আপন পথে যখন ফিরল তখন তার নির্দিষ্ট সময় হয়েছে উত্তীর্ণ। ধূমকেতুকে যে-পরিমাণ নড়িয়ে দিতে বুধগ্রহের যতখানি টানের জোর লেগেছিল তাই নিয়ে চলল অঙ্ককষা। যার যতটা ওজন সেই পরিমাণ জোরে সে টান লাগায় এটা জানা কথা, এর থেকেই বেরিয়ে পড়ল বুধগ্রহের ওজন। দেখা গেল তেইশটা বুধগ্রহের বাটখার চাপাতে পারলে তবেই তা পৃথিবীর ওজনের সমান হয়। . . . F