পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিশ্বপরিচয় । r రిసె4 বুধগ্রহের পরের রাস্তাতেই আসে শুক্রগ্রহের প্রক্ষিণের পালা। তার ২২৫ দিন লাগে স্বৰ্ষ ঘুরে আসতে। অর্থাং আমাদের সাড়েলাত মাসে তার বৎসর। ওর মেরুদণ্ড-ঘোর ঘূর্ণিপাকের বেগ কতটা তা নিয়ে এখনও তর্ক শেষ হয় নি। এই গ্রহটি বছরের এক সময়ে সূর্যাস্তের পরে পশ্চিম দিগন্তে দেখা দেয়, তখন তাকে বলি সন্ধ্যাতরা, আবার এই গ্রহই আর-এক সময়ে স্বৰ্ষ ওঠবার আগে পুবদিকে ওঠে, তখন তাকে শুকতারা বলে জানি। কিন্তু মোটেই এ তারা নয়, খুব জলজল করে ব’লেই সাধারণের কাছে তার খেতাব পেয়েছে। এর আয়তন পৃথিবীর চেয়ে অল্প-একটু কম। এই গ্রহের পথ পৃথিবীর পথের চেয়ে আরও তিন কোটি মাইল স্বর্ষের কাছে। সেও কম নয়। যথোচিত দুর বঁচিয়ে আছে তবু এর ভিতরকার খবর ভালো করে পাই নে। সে সূর্যের আলোর প্রখর আবরণের জন্তে নয়। বুধকে ঢেকেছে স্বর্ষেরই আলো, আর শুক্রকে ঢেকেছে এর নিজেরই ঘন মেঘ। বিজ্ঞানীরা হিসাব করে দেখেছেন শুক্রগ্রহের ষে উত্তাপ তাতে জলের বিশেষ রূপান্তর হয় না। কাজেই ওখানে জলাশয় আর মেঘ দুইয়ের অস্তিত্বই আশা করতে পারি। মেঘের উপরিতল থেকে যতটা আন্দাজ করা যায় তাতে প্রমাণ হয় এই গ্রহের অক্সিজেন-সম্বল নিতান্তই সামান্য । ওখানে ষে-গ্যাসের স্পষ্ট চিহ্ন পাওয়া যায় সে হচ্ছে আঙ্গারিক গ্যাস। মেঘের উপরতলায় তার পরিমাণ পৃথিবীর ঐ গ্যাসের চেয়ে বহু হাজার গুণ বেশি। পৃথিবীর এই গ্যাসের প্রধান ব্যবহার লাগে গাছপালার খাদ্য জোগাতে । এই আঙ্গারিক গ্যাসের ঘন আবরণে গ্রহটি যেন কম্বলচাপা। তার ভিতরের গরম বেরিয়ে আসতে পারে না। সুতরাং শুক্রগ্রহের উপরিতল ফুটন্ত জলের মতে কিংবা তার চেয়ে বেশি উষ্ণ । শুক্রে জোলে৷ বাম্পের সন্ধান যে পাওয়া গেল না সেটা আশ্চর্ষের কথা। শুক্রের ঘন মেঘ তা হলে কিসের থেকে সে-কথা ভাবতে হয়। সম্ভব এই যে মেঘের উচ্চস্তরে ঠাণ্ডায় জল এত জমে গেছে যে তার থেকে বাষ্প পাওয়া যায় না। এ কথাটা বিশেষ করে ভেবে দেখবার বিষয়। পৃথিবীতে স্বষ্টির প্রথম যুগে যখন গলিত বস্তুগুলো ঠাণ্ড হয়ে জমাট বধিতে লাগল তখন অনেক পরিমাণে জোলে বাষ্প আর আঙ্গারিক গ্যাসের উদ্ভব হল। তাপ আরও কমলে পর জোলো বাষ্প জল হয়ে গ্ৰহতলে সমুদ্র বিস্তার করে দিলে। তখন বাতাসে যে-সব গ্যাসের প্রাধান্ত ছিল তারা নাইট্রজেনের মতো সব নিক্রিয় গ্যাস । অক্সিজেন গ্যাসটা তংপর জগতের মিণ্ডক, অন্যান্য পদার্থের সঙ্গে মিশে যৌগিক পদার্থ তৈরি করা তার স্বভাব। এমনি