পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఏ8 রবীন্দ্র-রচনাবলী অপূর্ব উদ্বেগভরে সঙ্গিহীন ভ্ৰমিছেন ফিরে মহর্ষি বাল্মীকি কবি,– রক্তবেগতরঙ্গিত বুকে গম্ভীর জলদমন্দ্রে বারম্বার আবর্তিয়া মুখে নব ছন্দ ; বেদনায় অন্তর করিয়া বিদারিত মুহূর্তে নিল যে জন্ম পরিপূর্ণ বাণীর সংগীত, তারে লয়ে কী করিবে, ভাবে মুনি কী তার উদ্দেশ,— তরুণগরুড়সম কী মহংক্ষুধার আবেশ পীড়ন করিছে তারে, কী তাহার দুরন্ত প্রার্থনা, অমর বিহঙ্গশিশু কোন বিশ্বে করিবে রচনা আপন বিরাট নীড় — অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যাহারে দেয়, তার বক্ষে বেদনা অপার, তার নিত্য জাগরণ ; অগ্নিসম দেবতার দর্শন উধৰ্বশিখা জালি চিত্তে অহোরাত্র দগ্ধ করে প্রাণ । অস্তে গেল দিনমণি । দেবর্ষি নারদ সন্ধ্যাকালে শাখাস্থপ্ত পাগিদের সচকিয়া জটারশ্মিজালে, স্বগের নন্দনগন্ধে অসময়ে শ্রাস্ত মধুকরে বিস্মিত ব্যাকুল করি, উত্তরিলা তপোড্‌মি-পরে । নমস্কার করি কবি শুধাইলা সঁপিয়া আসন, “কী মহৎ দৈবকার্যে, দেব, তব মর্তে আগমন ?” নারদ কহিলা হাসি, “করুণার উৎসমুখে, মুনি, যে ছন্দ উঠিল উর্ধ্বে, ব্রহ্মলোকে ব্ৰহ্মা তাহা শুনি আমারে কহিলা ডাকি, যাও তুমি তমসার তীরে, বাণীর বিদ্যুৎ-দীপ্ত ছন্দোবাণ-বিদ্ধ বাল্মীকিরে বারেক শুধায়ে এস,— বোলো তারে, ওগো ভাগ্যবান , এ মহা সংগীতধন কাহারে করিবে তুমি দান। এই ছন্দে গাথি লয়ে কোন দেবতার যশঃকথা স্বর্গের অমরে কবি মর্তলোকে দিবে অমরতা ?’ ”