পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী و اهچالا বিষয় বলিয়া জ্ঞান করি তাহা আপনাকে মুখে বলিয়া শেষ করিতে পারিব না ।” অন্নদাবাবু কহিলেন, “বিলক্ষণ! তুমি আমাদের যোগেনের বন্ধু, তোমাকে ঘরের ছেলে বলিয়া মনে করিব না তো কী করিব ?” ভূমিকা তো হইল, তাহার পরে কী বলিতে হইবে, রমেশ কিছুতেই ভাবিয়া পায় না। অন্নদাবাবু রমেশের পথ স্বগম করিয়া দিবার জন্য কহিলেন, “রমেশ, তোমার মতো ছেলেকে ঘরের ছেলে করিতে পারা আমারই কি কম সৌভাগ্য!” ইহার পরেও রমেশের কথা জোগাইল না । অন্নদাবাবু কহিলেন, “দেখো না, তোমাদের সম্বন্ধে বাহিরের লোক অনেক কথা বলিতে আরম্ভ করিয়াছে। তাহারা বলে, হেমনলিনীর বিবাহের বয়স হইয়াছে, এখন তাহার সঙ্গিনির্বাচন সম্বন্ধে বিশেষ সতর্ক হওয়া আবশ্যক। আমি তাহাদিগকে বলি, রমেশকে আমি খুব বিশ্বাস করি— সে আমাদের উপরে কখনোই অন্যায় ব্যবহার করিতে পারিবে না।” রমেশ । অন্নদাবাবু, আমার সম্বন্ধে আপনি সমস্তই তো জানেন, আপনি যদি আমাকে যোগ্য পাত্র বলিয়া মনে করেন, তবে— অন্নদা। সে কথা বলাই বাহুল্য। আমরা তো একপ্রকার ঠিক করিয়াই রাখিয়াছি— কেবল তোমার সাংসারিক দুর্ঘটনার ব্যাপারে দিন স্থির করিতে পারি নাই। কিন্তু বাপু, আর বিলম্ব করা উচিত হয় না। সমাজে এ লইয়া ক্রমেই নানা কথার স্বষ্টি হইতেছে— সেটা যত শীঘ্র হয়, বন্ধ করিয়া দেওয়া কর্তব্য । কী বল ? রমেশ । আপনি যেরূপ আদেশ করিবেন তাহাই হইবে । অবশ্য সর্বপ্রথমে আপনার কন্যার মত জানা আবশুক । অন্নদা। সে তো ঠিক কথা । কিন্তু সে একপ্রকার জানাই আছে। তবু কাল সকালেই সে কথাটা পাকা করিয়া লইব । রমেশ । আপনার শুইতে যাইবার বিলম্ব হইতেছে, আজ তবে আসি । অন্নদা। একটু দাড়াও । আমি বলি কী, আমরা জব্বলপুরে যাইবার আগেই তোমাদের বিবাহটী হইয়া গেলে ভালো হয়। রমেশ । সে তো আর বেশি দেরি নাই । অন্নদা। না, এখনো দিন-দশেক আছে । আগামী রবিবারে যদি তোমাদের বিবাহ হইয়া যায় তাহা হইলে তাহার পরেও যাত্রার অয়োজনের জন্ত দু-তিন দিন