পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৌকাডুবি * * خالأخ যোগেন্দ্ৰ মনে করিল, ইহা গুরুতর অভিমানের কথা এবং এরূপ অভিমান সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। কহিল, ”আচ্ছ, তুমি কিছুই ভয় করিয়ে না, কারণ আমি আজই বাহির कब्रिग्रां यांमिद् ।” হেমনলিনী কোলের বইখানার পাতা অনাবশ্যক উলটাইতে উলটাইতে কহিল, “দাদা, আমি ভয় কিছুই করি না। কারণ বাহির করিবার জন্ত তুমি তাহাকে পীড়াপীড়ি কর, এমন আমার ইচ্ছা নয় ।” যোগেন্দ্ৰ ভাবিল, ইহাও অভিমানের কথা। কহিল, ”আচ্ছা, সে তোমাকে কিছুই ভাবিতে হইবে না।” বলিয়া তখনি চলিয়া যাইতে উদ্যত হইল । হেমনলিনী তখনি চৌকি ছাড়িয়া উঠিয়া কহিল, “না দাদা, এ কথা লইয়া তুমি র্তাহার সঙ্গে আলোচনা করিতে যাইতে পরিবে না । তোমরা তাহাকে যাহাই মনে করনা কেন, আমি তাহাকে কিছুমাত্র সন্দেহ করি না ।” তখন যোগেন্দ্রের হঠাং মনে হইল, এ তো অভিমানের মতো শুনাইতেছে না । তখন ক্ষেহমিশ্রিত করুণায় তাহার মনে মনে হাসি পাইল ! ভাবিল, ইহাদের সংসারের জ্ঞান কিছুই নাই ; এ দিকে পড়াশুনা এত করিয়াছে, পৃথিবীর খোজখবরও অনেক রাখে, কিন্তু কোনখানে সন্দেহ করিতে হইবে সে অভিজ্ঞতাটুকুও ইহার হয় নাই। এই নিঃসংশয় নির্ভরের সহিত রমেশের ছদ্মব্যবহারের তুলনা করিয়া যোগেন্দ্ৰ মনে মনে রমেশের উপর আরও চটিয়া উঠিল। কারণ বাহির করিবার প্রতিজ্ঞ তাহার মনে আরও দৃঢ় হইল। যোগেন্দ্র দ্বিতীয় বার চলিয়া যাইবার উপক্রম করিলে হেমনলিনী কাছে গিয়া তাহার হাত ধরিয়া কহিল, "দাদা, তুমি প্রতিজ্ঞা করে যে, তাহার কাছে এ-সব কথা একেবারে উত্থাপনমাত্র করিবে না।” .. যোগেন্দ্ৰ কহিল, “সে দেখা যাইবে।” হেমনলিনী । না দাদা, দেখা যাইবে না। আমার কাছে কথা দিয়া যাও। আমি তোমাদের নিশ্চয় বলিতেছি, তোমাদের কোনো চিন্তার বিষয় নাই। একটিবার আমার এই একটি কথা রাখে৷ ” হেমনলিনীর এইরূপ দৃঢ়তা দেখিয়া যোগেন্দ্ৰ ভাবিল, তবে নশ্চয় রমেশ হেমের কাছে সকল কথা বলিয়াছে, কিন্তু হেমকে যাহ-তাহ বলিয়া ভুলানো তো শক্ত নয়। কহিল, “দেখো হেম, অবিশ্বাসের কথা হইতেছে না। কন্যাপক্ষের অভিভাবকদের বাহা কর্তব্য তাহা করিতে হইবে তো। তোমার সঙ্গে তার যদি কিছু বোঝাপড়া হইয়া থাকে সে তোমরাই জান, কিন্তু সেই হইলেই তো যথেষ্ট হইল না— আমাদের সঙ্গেও তাহার বোঝাপড়া করিবার আছে। সত্য কথা বলিতে কি হেম, এখন তোমার চেয়ে । & 2 (t