পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* নৌকাডুবি २8१ কমলা। আশ্চর্য! তুমি এমন ভুলিয়া যাও! তুমি তো আমারই নাম জুলিয়াছিলে । রমেশ । কোশলের রাজা ভাটের মুখে এই কথা শুনিয়া— কমলা । কোশলের রাজা কোথা হইতে আসিল ? তুমি যে বলিলে মত্ৰদেশের রাজা— Ch রমেশ । সে কি এক জায়গার রাজা ছিল মনে কর ? সে কোশলেরও রাজা, মজেরও রাজা । কমলা। দুই রাজ্য বুঝি পাশাপাশি ? রমেশ । একেবারে গায়ে গায়ে লাগাও । এইরূপে বারংবার ভুল করিতে করিতে ও সতর্ক কমলার প্রশ্নের সাহায্যে সেই সকল ভুল কোনোমতে সংশোধন করিতে করিতে রমেশ এইরূপ ভাবে গল্পটি বলিয়া গেল— মদ্ররাজ রণজিৎ সিং কাঞ্চীরাজের নিকট রাজকন্যাকে বিবাহ করিবার প্রস্তাব জানাইয়া দূত পঠাইয়া দিলেন। কান্ধীর রাজা অমরসিং খুশি হইয়া সম্মত হইলেন । তখন রণজিৎ সিংহের ছোটো ভাই ইন্দ্রজিৎ সিং সৈন্যসামন্ত লইয়া নিশান উড়াইয়া কাড়া-নাকাড়া দুন্দুভি-দামামা বাজাইয়া কাকীর রাজ্যেষ্ঠানে গিয়া ভাবু ফেলিলেন। কাঞ্চীনগরে উৎসবের সমারোহ পড়িয়া গেল । রাজার দৈবজ্ঞ গণনা করিয়া শুভ দিনক্ষণ স্থির করিয়া দিল। কৃষ্ণ স্বাদশীতিথিতে রাত্রি আড়াই প্রহরের পর লগ্ন । রাত্রে নগরের ঘরে ঘরে ফুলের মালা ছলিল এবং দীপাবলী জলিয়া উঠিল। আজ রাত্রে রাজকুমারী চন্দ্রার বিবাহ । কিন্তু কাহার সহিত বিবাহ রাজকন্ধা চন্দ্রা সে কথা জানেন না । তাহার জন্মকালে পরমহংস পরমানন্দস্বামী রাজাকে বলিয়াছিলেন, ‘তোমার এই কন্যার প্রতি অশুভগ্রহের দৃষ্টি আছে, বিবাহকালে পাত্রের নাম যেন এ কন্যা জানিতে না পারে।” যথাকালে তরবারির সহিত রাজকন্যার গ্রন্থিবন্ধন হুইয়া গেল । ইন্দ্রজিৎ সিং যৌতুক আনিয়া তাহার জাতৃবধূকে প্রণাম করিলেন। মত্ররাজ্যের রণজিৎ এবং ইন্দ্রজিৎ যেন দ্বিতীয় রামলক্ষ্মণ ছিলেন। ইন্দ্রজিৎ