পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী সভ্যতার নব নব কত তৃষ্ণ ক্ষুধা, উঠে কত হলাহল, উঠে কত স্বধা, শুধু হেথা দুই তীরে— কে বা জানে নাম— দোহাপানে চেয়ে আছে দুইখানি গ্রাম । এই খেয়া চিরদিন চলে নদীস্রোতে, কেহ ষায় ঘরে, কেহু আসে ঘর হতে । ১৮ চৈত্র ১৩০২ কর্ম ভূত্যের না পাই দেখা প্রাতে। দুয়ার রয়েছে খোলা, স্বানজল নাই তোলা, মূখাধম আসে নাই রাতে । মোর ধৌত বস্ত্রখানি কোথা আছে নাহি জানি, কোথা আহারের আয়োজন ; বাজিয়া যেতেছে ঘড়ি, বসে আছি রাগ করি— দেখা পেলে করিব শাসন । বেলা হলে অবশেষে প্রণাম করিল এসে, দাড়াইল করি করজোড়, আমি তারে রোষাভরে কহিলাম, “দূর হরে, দেখিতে চাহি নে মুখ তোর ” শুনিয়া মূঢ়ের মতো ক্ষণকাল বাক্যহত মুখে মোর রহিল সে চেয়ে, কহিল গদগদম্বরে, “কালি রাত্রি দ্বিপ্রহরে মারা গেছে মোর ছোটো মেয়ে ।” এত কহি ত্বরা করি গামোছাটি কাধে ধরি নিত্যকাজে গেল সে একাকী । প্রতিদিবসের মতো ঘষা মাজা মোছা কত, কোনো কর্ম রহিল না বাকি । ১৮ চৈত্র ১৩০২