পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৌকাডুবি Oow) কমলা । তা হোক-না, বিয়েবাড়িতে কত ধুম হইতেছে, ভালো করিয়া দেখিয়া स्वग्नि ८१ षां । এ সম্বন্ধে উমেশকে অধিক উৎসাহিত করিবার প্রয়োজন ছিল না। সে চলিয়া যাইতে উষ্ঠত হইলে কমল হঠাৎ তাহাকে ডাকিয়া কহিল, “দেখ, খুড়োমশায় আসিলে छूहे-” এইটুকু বলিয়া কথাটা কী করিয়া শেষ করিতে হইবে ভাবিয়া পাইল না। উমেশ ই করিয়া দাড়াইয়া রহিল। কমলা খানিক ক্ষণ ভাবিয়া কহিল, “মনে বৃথিস, খুড়োমশায় তোকে ভালোবাসেন তোর যখন যা দরকার হইবে, আমার প্ৰণাম জানাইয়া তুই তার কাছে চাস, তিনি দিবেন— তাকে আমার প্রণাম দিতে কখনো ভুলিস নে— জানিস ?” উমেশ এই অনুশাসনের কোনো অর্থ না বুঝিয়া “যে আজ্ঞে” বলিয়া চলিয়া গেল। অপরাহ্লে বিষণ জিজ্ঞাসা করিল, “মাজি, কোথায় যাইতেছ ?” কমলা কহিল, "গঙ্গায় স্নান করিতে চলিয়াছি।” বিষণ কহিল, “সঙ্গে যাইব ।” কমল কহিল, "না, তুই ঘরে পাহারা দে।” বলিয়া তাহার হাতে অনাবশ্বক একটা টাক দিয়া কমলা গঙ্গার দিকে চলিয়া গেল । سOb\ একদিন অপরাহ্লে, হেমনলিনীর সহিত একত্রে নিভৃতে চা খাইবার প্রত্যাশায় অন্নদাবাবু তাহাকে সন্ধান করিবার জন্য দোতলায় আসিলেন ; দোতলায় বসিবার ঘরে তাহাকে খুজিয়া পাইলেন না, শুইবার ঘরেও সে নাই। বেহারাকে জিজ্ঞাসা করিয়া জানিলেন, হেমনলিনী বাহিরে কোথাও যায় নাই। তখন অত্যন্ত উৎকষ্ঠিত হইয়া অন্নদা ছাদের উপরে উঠিলেন। তখন কলিকাতা শহরের নানা আকার ও আয়তনের বহুদূরবিস্তৃত ছাদগুলির উপরে হেমস্তের অবসর রৌদ্র মান হইয়া আসিয়াছে, দিনান্ডের লঘু হাওয়াটি থাকিয়৷ থাকিয় যেমন-ইচ্ছা ঘুরিয়া ফিরিয়া যাইতেছে। হেমনলিনী চিলের ছাদের প্রাচীরের ছায়ায় চুপ করিয়া বলিয়া ছিল। অন্নদাবাবু কখন তাহার পিছনে আসিয়া দাড়াইলেন তাহা সে টেরও পাইল না। অবশেষে জয়দাবাৰু ৰখন জান্তে জান্তে তাহার পাশে আসিয়া তাহার কাধে হাত রাখিলেন তখন সে চমকিয়া উঠিল এবং পরক্ষণেই লজ্জায় তাহার মুখ লাল হইয়া