পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

i রবীন্দ্র-রচনাবলী • פלא নাই। আমার একটি দৌহিত্রীর অসুখ, আপনার ছেলেকে ডাকিতে আসিয়াছিলাম, তিনি বাড়ি নাই ; তাই মনে করিলাম শুধু শুধু ফিরিব না, একবার আপনাকে দর্শন করিয়া যাইব ।” ক্ষেমংকরী কহিলেন, "নলিন এখনি আসিবে, আপনি ততক্ষণ একটু বস্থন। বেলা নিতান্ত কম হয় নাই, আপনার জন্য কিছু জলখাবার আনাইয়া দিই।” খুড়া কহিলেন, “আমি জানিতাম, আপনি আমাকে না খাওয়াইয়া ছাড়িবেন না— আমার যে ভোজনে বেশ একটুখানি শখ আছে তাহা আমাকে দেখিলেই লোকে টের পায়, এবং সকলেই এ বিষয়ে আমাকে একটু দয়াও করে।” ক্ষেমংকরী খুড়াকে জল খাওয়াইয়া বড়ো খুশি হইলেন। কহিলেন, “কাল আমার এখানে আপনার মধ্যাহ্নভোজনের নিমন্ত্রণ রহিল ; আজ প্রস্তুত ছিলাম না, আপনাকে ভালো করিয়া খাওয়াইতে পারিলাম না ।” খুড়া কহিলেন, “যখনি প্রস্তুত হইবেন এই ব্রাহ্মণকে স্মরণ করিবেন। আপনাদের বাড়ি হইতে আমি বেশি দূরে থাকি না। বলেন তো আপনার চাকরটাকে লইয়া আমার বাড়ি দেখাইয়া আসিব ।” এমনি করিয়া খুড়া দুই-চারি দিনের যাতায়াতেই নলিনাক্ষের বাড়িতে বেশ একটু জমাইয়া লইলেন । ক্ষেমংকরী নলিনাক্ষকে ডাকিয়া কহিলেন, “ও নলিন, তুই চক্রবর্তীমশায়ের কাছ থেকে ভিজিট নিস নে যেন !” খুড়া হাসিয়া কহিলেন, “মাতু-আজ্ঞা উনি পাইবার পূর্ব হইতেই পালন করিয়া আসিতেছেন, আমার কাছ হইতে উনি কিছুই নেন নাই। যাহারা দাতা তাহার গরিবকে দেখিলেই চিনিতে পারেন।” দিন-দুয়েক পিতায় ও কন্যায় পরামর্শ চলিল। তাহার পরে এক দিন সকালে খুড়া কমলাকে কহিল, "চলো মা, আমরা দশাশ্বমেধে স্বান করিতে যাই ।” কমলা শৈলকে কহিল, “দিদি, তুমিও চলো-না।” শৈল কহিল, “না ভাই, উমির শরীর তেমন ভালো নাই ।” খুড়া যে পথ দিয়া স্বানের ঘাটে গেলেন স্নানাস্তে সে পথ দিয়া না ফিরিয়া অন্ত এক রাস্তায় চলিলেন। কিছু দূর গিয়াই দেখিলেন, একটি প্রবীণ স্বান সারিয়া পট্টবস্ত্র পরিয়া ঘটিতে গঙ্গাজল লইয়া ধীরে ধীরে আসিতেছেন। # কমলাকে সম্মুখে আনিয়া খুড়া কহিলেন, “ম, ইহাকে প্রণাম করে, ইনি ডাক্তারবাবুর মাতা।” 驢 腎