পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী و صاg গুরুভারাক্রান্ত গোরুর গাড়ির চাকার মতো আর্তনা করিতে করিতে চলিতেছে না। গাছের তলা দিয়া দিয়া একটুখানি শীতল নিঝর যেমন ছায়ায় ছায়ায় কুলকুল করিয়া যায়, জীবন তেমনি করিয়া যাইতেছে। সমুখে ওই আদালত। কিন্তু এখানকার আদালতও তেমন কঠোরমূর্তি নয়। ভিতরে যখন উকিলে উকিলে শামলায় শামলায় লড়াই বাধিয়াছে তখন বাহিরের অশথগাছ হইতে দুই পাপিয়ার অবিশ্রাম উত্তরপ্রত্যুত্তর চলিতেছে। বিচারপ্রার্থী লোকেরা আমগাছের ছায়ায় বসিয়া জটলা করিয়া হাহা করিয়া হাসিতেছে,এখান হইতে শুনিতে পাইতেছি । মাঝে মাঝে আদালত হইতে মধ্যাহের ঘণ্টা বাজিতেছে। চারি দিকে যখন জীবনের মৃদুমন্দ গতি তখন এই ঘণ্টার শব্দ শুনিলে টের পাওয়া যায় যে শৈথিল্যের স্রোতে সময় ভাসিয়া যায় নাই, সময় মাঝখানে দাড়াইয়া প্রতি ঘণ্টায় লৌহকণ্ঠে বলিতেছে, আর কেহ জাগুক না-জাণ্ডক আমি জাগিয়া আছি । কিন্তু লেখকের অবস্থা ঠিক সেরূপ নয়। আমার চোখে তজ্ঞা আসিতেছে। আষাঢ় ১২৯২ সরোজিনী-প্রয়াণ चनभां ॐ विद्ब्र१ ১১ই জ্যৈষ্ঠ শুক্রবার। ইংরাজি ২৩শে মে ১৮৮৪ খৃস্টাব্দ । আজ শুভলগ্নে সরোজিনী বাষ্পীয় পোত তাহার দুই সহচরী লৌহতরা দুই পার্থে লইয়া বরিশালে তাহার কর্মস্থানের উদ্দেশে যাত্রা করিবে। যাত্রীর দল বাড়িল ; কথা ছিল আমরা তিন জনে যাইব— তিনটি বয়ঃপ্রাপ্ত পুরুষমানুষ । সকালে উঠিয়া জিনিসপত্র বাধিয়া প্রস্তুত হইয়া আছি, পরমপরিহসনীয় শ্ৰীমতী ভ্রাতৃজায়া-ঠাকুরানীর নিকটে মানমুখে বিদায় লইবার জন্য সমস্ত উদযোগ করিতেছি এমন সময় শুনা গেল তিনি সসস্তানে আমাদের অনুবর্তিনী হইবেন । তিনি কার মুখে শুনিয়াছেন যে আমরা যে পথে বাইতেছি সে পথ দিয়া বরিশালে যাইব বলিয়া অনেকে বরিশালে যায় নাই এমন শুনা গিয়াছে ; আমরাও পাছে সেইরূপ ফাকি দিই এই সংশয়ে তিনি অনেক ক্ষণ ধরিয়া নিজের ডান হাতের পাঁচটা ছোটাে ছোটাে সরু সরু জাঙলের নখের দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া বিস্তর বিবেচনা করিতে লাগিলেন, অবশেষে ঠিক আটটার সময় নখাগ্র