পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
প্রাচীন সাহিত্য
রামায়ণ

 রামায়ণ-মহাভারতকে যখন জগতের অস্তান্ত কাব্যের সহিত তুলনা করিয়া শ্রেণীবদ্ধ করা হয় নাই তখন তাহদের নাম ছিল ইতিহাস । এখন বিদেশীয় সাহিত্যভাণ্ডারে যাচাই করিয়া তাহদের নাম দেওয়া হইয়াছে এপিক”। আমরা এপিক শব্দের বাংলা মামকরণ করিয়াছি মহাকাব্য । এখন আমরা রামায়ণ-মহাভারতকে মহাকাব্যই বলিয়া থাকি।

 মহাকাব্য নামটি ভালোই হইয়াছে। নামের মধ্যেই যেন তাহার সংজ্ঞাটি পাওয়া যায়। ইহাকে আমরা কোনো বিদেশী শব্দের অনুবাদ বলিয়া এখন যদি না স্বীকার করি তাহাতে ক্ষতি হয় না। ர অম্বুবাদ বলিয়া স্বীকার করিলে পরদেশীয় অলংকারশাস্ত্রের এপিক লক্ষণের সহিত আগাগোড়া না মিলিলেই মহাকাব্যনামধারীকে কৈফিয়ত দিতে হয়। এরূপ জবাবদিহির মধ্যে থাকা অনাবশুক বলিয়া মনে করি ।

 মহাকাব্য বলিতে কী বুঝি আমরা তাহার আলোচনা করিতে প্রভত আছি, কিন্তু এপিকের সঙ্গে তাহাকে আগাগোড়া মিলাইয়া দিব এমন পণ করিতে পারি না । কেমন করিয়াই বা করিব ? প্যারাডাইস লস্ট কেও তো সাধারণে এপিক বলে, তা যদি হয় তবে রামায়ণ-মহাভারত এপিক নহে— উভয়ের এক পংক্তিতে স্থান হইতেই পারে না।

 মোটামুটি কাব্যকে দুই ভাগ করা যাক। কোনো কাব্য বা একলা কবির কথা, কোনো কাব্য বা বৃহৎ সম্প্রদায়ের কথা।