পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ésé ब्रवैौञ्ज-ब्रध्नांबलौ বে দেশে যে কালে বীররসের গৌরব প্রাধান্ত পাইয়াছে সে দেশে সে কালে স্বভাবতই এপিক বীররসপ্রধান হইয়া পড়িয়াছে। রামায়ণেও যুদ্ধব্যাপার যথেষ্ট আছে, রামের বাহুবলও সামান্ত নহে, কিন্তু তথাপি রামায়ণে যে রস সর্বাপেক্ষা প্রাধান্ত লাভ করিয়াছে তাহা বীররস নহে। তাহাতে বাহুবলের গৌরব ঘোষিত হয় নাই, যুদ্ধঘটনাই তাহার মুখ্য বর্ণনার বিষয় নহে। দেবতার অবতারলীলা লইয়াই যে এ কাব্য রচিত তাহীও নহে। কবি বাল্মীকির কাছে রাম অবতার ছিলেন না, তিনি মানুষই ছিলেন, পণ্ডিতেরা ইহার প্রমাণ করিবেন। এই ভূমিকায় পাণ্ডিত্যের অবকাশ নাই ; এখানে এইটুকু সংক্ষেপে বলিতেছি যে, কবি যদি রামায়ণে নরচরিত্র বর্ণনা না করিয়া দেবচরিত্র বর্ণনা করিতেন, তবে তাহাতে রামায়ণের গৌরব হ্রাস হইত, সুতরাং তাহা কাব্যাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হইত। মানুষ বলিয়াই রামচরিত্র মহিমান্বিত । আদিকাণ্ডের প্রথম সর্গে বাল্মীকি তাহার কাব্যের উপযুক্ত নায়ক সন্ধান করিয়া যখন বহু গুণের উল্লেখ করিয়া নারদকে জিজ্ঞাসা করিলেন— সমগ্র রূপিণী লক্ষ্মীঃ কমেকং সংশ্রিত নরম। কোন একটিমাত্র নরকে আশ্রয় করিয়া সমগ্র লক্ষ্মী রূপ গ্রহণ করিয়াছেন ? তখন নারদ কহিলেন— \ দেবেন্ধপি ন পশুমি কশ্চিদেভিরগুণৈরযুতম্। শ্রয়তাং তু গুণৈরেভির্ষে যুক্তে নরচন্দ্রমাঃ । এত গুণযুক্ত পুরুষ তো দেবতাদের মধ্যেও দেখি না, তবে যে নরচআমার মধ্যে এই-- সকল গুণ আছে তাহার কথা শুন । রামায়ণ সেই নরচন্দ্রমারই কথা, দেবতার কথা নহে । রামায়ণে দেবতা নিজেকে খর্ব করিয়া মানুষ করেন নাই, মাতুবই নিজগুণে দেবতা হইয়া উঠিয়াছেন। মানুষেরই চরম আদর্শস্থাপনার জন্ত ভারতের কবি মহাকাব্য রচনা করিয়াছেন। এবং সেদিন হইতে আজ পর্যন্ত মানুষের এই আদর্শচরিত-বর্ণনা ভারতের পাঠকমণ্ডলী পরমাগ্রহের সহিত পাঠ করিয়া আলিতেছে । f রামায়ণের প্রধান বিশেষত্ব এই যে, তাহ ঘরের কথাকেই অত্যন্ত বৃহৎ করিয়া দেখাইয়াছে। পিতাপুত্রে, ভ্ৰাতায় ভ্ৰাতায়, স্বামীঙ্গীতে ৰে ধর্মের বন্ধন, ৰে গ্ৰীতিভক্তির সম্বন্ধ রামায়ণ তাহাকে এত মহৎ করিয়া তুলিয়াছে যে, তাহ অতি সহজেই মহাকাব্যের উপযুক্ত হইয়াছে। দেশজয়, শত্রুবিনাশ, ছুই প্রবল বিরোধী পর্কের প্রচণ্ড আঘাত-সংঘাত, এই সমস্ত ব্যাপারই সাধারণত মহাকাব্যের মধ্যে আন্দোলন ও