পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এটীৰ সাহিত্য

নরনারীর দুর্নিবার দুরন্ত প্রেমের এলৰেল আপনাকে নত করিয়া মজলমহাসমুদ্রের মধ্যে পরমততা লাভ করিয়াছে এই তাহা বনবিহীন দুধর্ষ প্রেমের অপেক্ষা মহান বিকল্প।

পৌষ ১৩৮

শকুন্তলা


শেক্সপীয়রের টেম্পেস্ট, নাটকেসহিত কালিদাসের শকুন্তলার তুলনা মনে সহজেই উদয় হইতে পারে। ইহাদের বাহু সাদৃশ্য এবং আন্তরিক অনৈক্য আলােচনা করিয়া দেখিবার বিষয়। | নিনলালিত মিরান্দার সহিত রাজকুমার ফার্দিনান্দের প্রণয় তাপসকুমারী শকুলার সহিত দুষ্মন্তের প্রণয়ের অনুরূপ। ঘটনাস্থলটিরও সাদৃশ্য আছে ; এক পকে সমুদ্রবেষ্টিত বীপ, অপর পক্ষে তপােকন। | এইরূপে উভয়ের আখ্যানমূলে ঐক্য দেখিতে পাই, কিন্তু কাব্যরসের স্বাদ সম্পূর্ণ বিভিন্ন, তাহা পড়িলেই অনুভব করিতে পারি। যুরােপের কবিকুল গেটে একটিমাত্র গােকে শকুন্তলার সমালােচনা লিখিয়াছেন, তিনি কাব্যকে খণ্ডখণ্ড বিচ্ছিন্ন করেন নাই। তাঁহার শ্লোকটি একটি দীপবর্তিকার শিখার ন্যায় ক্ষুদ্র, কিন্তু তাহা দীপশিখার মতােই সমগ্ৰ শকুন্তলাকে এক মুহূর্তে উভাসিত করিয়া দেখাইবার উপায়। তিনি এক কথায় বলিয়াছেন, কেহ যদি তরুণ বৎসরের ফুল ও পৰিণত বৎসরের ফল, কেহ যদি মর্ত ও স্বর্গ একত্র দেখিতে চায়, তবে শকুন্তলায় তাহা পাইবে। অনেকেই এই কথাটি কবির উচ্ছাসমাত্র মনে করিয়া লঘুভাবে পাঠ করিয়া থাকেন। তাঁহারা মােটামুটি মনে করেন, ইহার অর্থ এই যে, গেটের মতে শকুন্তলা কাব্যখানি অতি উপাদেয়। কিন্তু তাহা নহে। গেটের এই গােকটি আনন্দের অত্যুক্তি নহে, ইহা রসজ্ঞের বিচার। ইহার মধ্যে বিশেষত্ব আছে। কবি বিশেষ তাৰেই বলিয়াছেন, শকুন্তলার মধ্যে একটি গভীর পরিণতির ভাব আছে, সে পরিণতি ফুল হইতে ফলে পৰিণতি, মর্ত হইতে স্বর্গে পরিণতি, স্বভাব হইতে ধর্মে পরিণতি। মেঘদুতে যেমন পূর্বমেঘ ও উত্তরমে আছে, পূৰমেষে পৃথিবীর বিচিত্র সৌন্দর্য পাটন করিয়া উমেৰে অলকাপুরীর নিসৌৰে উত্তীর্ণ হইতে হয়, তেমনি শবুলায় একটি পূর্ণমিলন ও একটি উত্তরমিন আছে। প্রথম-অঙ্ক-বর্তী সেই মর্তের