পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচর [ রবীন্দ্র-রচনাবলীর বর্তমান খণ্ডে মুদ্রিত গ্রন্থগুলির প্রথম সংস্করণ, বর্তমানে স্বতন্ত্র গ্রন্থাকারে প্রচলিত সংস্করণ, ও রচনাবলী-সংস্করণ, এই তিনটির পার্থক্য সংক্ষেপে ও সাধারণভাবে নির্দেশ করা গেল। এই খণ্ডে মুদ্রিত কোনো কোনো রচনা সম্বন্ধে কবির নিজের মন্তব্যও সংকলিত হইল । ] চৈতালি চৈতালি ১৩০৩ সালে সত্যপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়-প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থাবলীর অন্তর্গত হুইয়া গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। কবি চৈতালি সম্বন্ধে লিখিয়াছেন— “চৈতালি-শীর্ষক কবিতাগুলি লেখকের সর্বশেষের লেখা। তাহার অধিকাংশই চৈত্রমাসে লিখিত বলিয়া বৎসরের শেষ উৎপন্ন শস্তের নামে তাহার নামকরণ করিলাম। —ভূমিকা। কাব্যগ্রন্থাবলী ছিন্ন পত্রের একটি চিঠিতে কর্ম’ কবিতাটি রচনার ইতিহাস লিপিবদ্ধ আছে।— ‘মনে আছে সাজাদপুরে থাকতে সেখানকার খানসামা একদিন সকালে দেরি করে আসাতে আমি রাগ করেছিলুম ; সে এসে তার নিত্যনিয়মিত সেলামটি করে ঈষৎ অবরুদ্ধ কণ্ঠে বললে, কাল রাত্রে আমার আট বছরের মেয়েটি মারা গেছে। এই বলে ঝাড়নটি কাধে করে আমার বিছানাপত্র ঝাড়পোছ করতে গেল।”— শিলাইদা। ১৪ অগস্ট ১৮৯৫ সাহিত্যের পথে গ্রন্থে কবি প্রসন্ধান্তরে এই ঘটনাটির উল্লেখ করিয়াছেন। ‘ছিলেম মফস্বলে, সেখানে আমার এক চাকর ছিল, তার বুদ্ধি বা চেহারা লক্ষ্য করবার যোগ্য ছিল না। রাত্রে বাড়ি চলে যায়, সকালে এসে ঝাড়ন কাধে কাজকর্ম করে। তার প্রধান গুণ, সে কথা বেশি বলে না। সে যে আছে সে তথ্যটা অনুভব করলুম ষেদিন সে হল অনুপস্থিত। সকালে দেখি স্নানের জল তোলা হয় নি, ঝাড়পোছ বন্ধ। এল বেলা দশটার কাছাকাছি। বেশ একটু রূঢ়স্বরে জিজ্ঞাসা করলুম, কোথায় ছিলি ! সে বললে, আমার মেয়েটি মারা গেছে, কাল রাতে। ব’লেই ঝাড়ন নিয়ে নিঃশব্দে কাজে লেগে গেল। বুকটা ধক করে উঠল। তৃত্যরূপে ষে ছিল প্রয়োজনীয়তার আবরণে ঢাকা, তার আবরণ উঠে গেল ; মেয়ের বাপ বলে তাকে দেখলুম, আমার সঙ্গে তার স্বরূপের মিল হয়ে গেল, সে হল প্রত্যক্ষ, সে হল বিশেষ। f