পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গান্ধারী । কাহিনী এক বিনাশের তলে তলাইয়া মরি অকাতরে— অংশ লই তার দুর্গতির, অর্ধ ফল ভোগ করি তার দুর্মতির, সেই তো সাৰনা মোর— এখন তো আর বিচারের কাল নাই, নাই প্রতিকার, নাই পথ— ঘটেছে যা ছিল ঘটিবার, ফলিবে যা ফলিবার আছে । হে আমার অশাস্ত হৃদয়, স্থির হও । নতশিরে প্রতীক্ষা করিয়া থাকো বিধির বিধিরে ধৈর্য ধরি। যেদিন সুদীর্ঘ রাত্রি-’পরে সদ্য জেগে উঠে কাল সংশোধন করে আপনারে, সেদিন দারুণ দুঃখদিন। দুঃসহ উত্তাপে যথা স্থির গতিহীন ঘুমাইয়া পড়ে বায়ু— জাগে ঝঞ্চাঝড়ে অকস্মাৎ, আপনার জড়ত্বের পরে করে আক্রমণ, অন্ধ বৃশ্চিকের মতো ভীমপুচ্ছে আত্মশিরে হানে অবিরত দীপ্ত বজ্রশূল, সেইমতে কাল যবে জাগে তারে সভয়ে অকাল কহে সবে। লুটাও লুটাও শির, প্রণম রমণী, সেই মহাকালে ; তার রথচক্ৰধ্বনি দুর রুদ্রলোক হতে বজঘর্বরিত ওই শুনা যায় । তোর আর্ত জর্জরিত হৃদয় পাতিয়া রাখ, তার পথতলে । ছিল্প সিক্ত হৃৎপিণ্ডের রক্তশতদলে অঞ্জলি রচিয়া থাকৃ জাগিয়া নীরবে চাহিয়া নিমেষহীন । তার পরে আবে গগনে উড়িবে ধূলি, কঁাপিবে ধরণী, সহসা উঠিবে শূন্তে ক্ৰন্দনের ধ্বনি— [ প্রস্থান