পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪২৭

8のbr রবীন্দ্র-রচনাবলী খৰ্বতা। কুমুর সঙ্গে নিজের দুর্লঙ্ঘ অসাম্য কেবলই ব্যাকুলতা বাড়িয়ে তুলছে। দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে মধুসূদন বললে, “একটি জিনিস। যদি দিই তো কী দেবে বলে ।” কুমু বুঝতে পারলে দাদার দেওয়া সেই জিনিস, ব্যগ্রতার সঙ্গে মধুসূদনের মুখের দিকে চেয়ে রইল । “যেমন জিনিসটি তারই উপযুক্ত দাম নেব। কিন্তু,” বলে খাটের নীচে থেকে রেশমের খোল দিয়ে মােড়া একটি এসরাজ বের করে তার মােড়কটি খুলে ফেললে। কুমুর সেই চিরপরিচিত এসরাজ, হাতির দাঁতে খচিত। বাড়ি থেকে চলে আসবার সময় এইটি ফেলে এসেছিল। মধুসূদন বললে, “খুশি হয়েছ তো ? এইবার দাম দাও।” মধুসূদন কী দাম চায় কুমু বুঝতে পারলে না, চেয়ে রইল। মধুসূদন বললে, “বাজিয়ে শোনাও আমাকে ৷” last বেশি কিছু নয়, তবু বড়ো শক্ত দাবি । কুমু এইটুকু আন্দাজ করতে পেরেছে যে, মধুসূদনের মনে সংগীতের রস নেই। এর সামনে বাজানোর সংকোচ কাটিয়ে তোলা কঠিন। কুমু মুখ নিচু করে এসরাজের ছড়িটা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে লাগল। মধুসূদন বললে, “বাজাও-না বড়োবাউ, আমার সামনে লজা কোরো না ।” কুমু বললে, “সুর বাধা নেই।” “কবে শোনাবে ঠিক করে বলে । কাল ?” "उाष्छा, कान ।।” “সন্ধেবেলায় আপিস থেকে ফিরে এলে ?” “হা, তাই হবে ।” “এসরাজটা পেয়ে খুব খুশি হয়েছ ?” “খুব খুশি হয়েছি।” শালের ভিতর থেকে একটা চামড়ার কেস বের করে মধুসূদন বললে, “তােমার জন্যে যে মুক্তার মালা কিনে এনেছি, এটা পেয়ে ততখানিই খুশি হবে না?” । এমনতরো মুশকিলের প্রশ্ন কেন জিজ্ঞাসা করা ? কুমুচুপ করে এসরাজের ছড়িটা নড়াচাড়া করতে व्ळ्ञ् । সালে "মই আগে পেয়েছে, কেবল চােখে পাবার তৃষ্ণা নিয়ে যার জন্যে মিনতি চিরদিন গেল- ‘ঠাড়ি রহাে মেরে আঁখনকে আগে।” ।