পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রভাতসংগীত মহাছন্দে বাধা হয়ে যুগ যুগ যুগ যুগান্তর পড়িল নিয়ম-পাঠশালে অসীম জগৎ-চরাচর । শ্রান্ত হয়ে এল কলেবর, নিদ্রা আসে নয়নে তাহার, আকর্ষণ হতেছে শিথিল, উত্তাপ হতেছে একাকার । জগতের প্রাণ হতে উঠিল রে বিলাপসংগীত, কাদিয়া উঠিল চরি৷ ভিত । পুরবে বিলাপ উঠে, পশ্চিমে বিলাপ উঠে, কাদিল রে উত্তর দক্ষিণ, কঁদে গ্রহ, কাদে তারা, শ্রান্তদেহে কাদে রবি জগৎ হইল শান্তিহীন । চারি দিক হতে উঠিতেছে আকুল বিশ্বের কণ্ঠস্বর, * জাগো জাগো জাগো মহাদেবী, কবে মোরা পাব অবসর ? অলঙঘ্য নিয়ামপথে ভ্ৰমি হয়েছে, হে শ্রান্ত কলেবর | নিয়মের পাঠ সমাপিয়া সাধ গেছে খেলা করিবারে, একবার ছেড়ে দাও, দেব, অনঙ্গু এ আকাশ-মাবারে !" জগতের আত্মা কহে কাদি * আমারে নূতন দেহ দাও—— প্রতিদিন বাড়িছে হৃদয়, প্রতিদিন টুটিতেছে দেহ, প্ৰতিদিন ভাঙিতেছে বল । গাও দেব মরণসংগীত পাব মোরা নতন জীবন ৷” জগৎ কাদিল উচ্চারবে জাগিয়া উঠিলা মহেশ্বর, হেরিলেন দিক দিগন্তর । প্ৰলয়বিষাণ তুলি করে ধরিলেন শূলী, পদতলে জগৎ চাপিয়াজগতের আদি অন্ত থরথর থারথার একবার উঠিল কঁপিয়া ।