পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজর্ষি Գ8ծ সুজা হাল ছাড়িয়া দিয়া বলিলেন, “ভারি হাঙ্গাম! এত কথা শোনার চেয়ে তোমার নালিশ শোনা उलाढ्ला । दक्लिश यां९3 ।” কুমুক্তি কৃছিলেন, "ত্রিপুরার রাজা গােবিন্দমাণিকা ঠাহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা নক্ষত্ৰবায়কে বিনা অপরাধে সুজা বিরক্ত হইয়া কহিলেন, “ব্ৰাহ্মণ, তুমি পরের নালিশ লইয়া কেন আমার সময় নষ্ট করিতেছ। এখন এ-সমস্ত বিচার করিবার সময় নয় ।” রঘুপতি কহিলেন, “ফরিয়াদী রাজধানীতে হাজির আছেন।” সুজা কহিলেন, “তিনি আপনি উপস্থিত থাকিয়া আপনার মুখে যখন নালিশ উত্থাপন করিবেন তখন বিবেচনা করা যাইবে ।” রঘুপতি কহিলেন, “র্তাহাকে কবে এখানে হাজির করিব ?” সুজা কহিলেন, “ব্ৰাহ্মণ কিছুতেই ছাড়ে না। আচ্ছ এক সপ্তাহ পরে আনিয়ো ।” রঘুপতি কহিলেন, “বাদশাহ যদি হুকুম করেন তো আমি তাহাকে কাল আনিব ।” আজিকার মতো নিষ্কৃতি পাইলেন । রঘুপতি বিদায় লইলেন । রঘুপতি কহিলেন, “সেজন্য তোমাকে ভাবিতে হইবে না।” নজরের জন্য তিনি দেড়লক্ষ মুদ্রা উপস্থিত করিলেন। পরদিন প্ৰভাতে রঘুপতি কম্পিতহাদয় নক্ষত্ররায়কে লইয়া সুজার সভায় আসিয়া উপস্থিত হইলেন। যখন দেড় লক্ষ টাকা নবাবের পদতলে স্থাপিত হইল। তখন তাহার মুখশ্ৰী তেমন অপ্ৰসন্ন বোধ হইল না । নক্ষত্ররায়ের নালিশ অতি সহজেই তাহার হৃদয়ঙ্গম হইল । তিনি কহিলেন, “এক্ষণে তোমাদের কী অভিপ্ৰায় আমাকে বলে ।” দিতে আজ্ঞা হউক ৷” যদিও সুজা নিজে ভ্রাতার সিংহাসনে হস্তক্ষেপ করিতে কিছুমাত্র সংকুচিত হন না, তথাপি এ স্থলে র্তাহার মনে কেমন আপত্তি উপস্থিত হইল। কিন্তু রঘুপতির প্রার্থনা পূরণ করাই তাহার। আপাতত সকলের চেয়ে সহজ বোধ হইল- নহিলে রঘুপতি বিস্তর বকবিকি করিবে এই তাহার ভয় । বিশেষত দেড় লক্ষ টাকা নজরের উপরেও অধিক আপত্তি করা ভালো দেখায় না। এইরূপ তাহার মনে হইল । তিনি বলিলেন, “আচ্ছা, গোবিন্দমাণিক্যের নির্বােসন এবং নক্ষত্ররায়ের রাজ্যপ্ৰাপ্তির পরোয়ানা-পত্ৰ তোমাদের সঙ্গে দিব, তোমরা লইয়া যাও ।” রঘুপতি কহিলেন, “বাদশাহের কতিপয় সৈন্যও সঙ্গে দিতে হইবে।” সুজা দৃঢ়স্বরে কহিলেন, “না, না, না- তাহা হইবে না, যুদ্ধবিগ্ৰহ করিতে পারিব না।” রঘুপতি কহিলেন, “যুদ্ধের ব্যয়স্বরূপ আরো ছত্রিশ হাজার টাকা আমি রাখিয়া যাইতেছি। এবং ত্রিপুরায় নক্ষত্ররায় রাজা হইবামাত্র এক বৎসরের খাজনা সেনাপতির হাত দিয়া পঠাইয়া দিব ।” এ প্রস্তাব সুজার অতিশয় যুক্তিসংগত বােধ হইল, এবং অমাত্যেরাও র্তাহার সহিত একমত হইল। একদল মোগল সৈন্য সঙ্গে লইয়া রঘুপতি ও নক্ষত্ররায় ত্রিপুরাভিমুখে যাত্ৰা করিলেন ।