পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শু্যামলী শিবরামবাবুর শখের বাগান ফলে আছে ভরে। কনি শুধোল, “কোন ফল ভালোবাস সব চেয়ে । আমি বললেম, “ঐ মজঃফরপুরের লিচু।” কনি বললে, “গাছে চড়ে পাড়তে থাকো, ধরে রইলেম ঝুড়ি ।” ঝুড়ি প্রায় ভরেছে, হঠাৎ গর্জন উঠল “কে রে”— স্বয়ং শিবরামবাবু। বললেন, “আর কোনো বিদ্যা হবে না বাপু, চুরি বিদ্যাই শেষ ভরসা।” ঝুড়িটা নিয়ে গেলেন তিনি পাছে ফলবান হয় পাপের চেষ্টা । কনির দুই চোখ দিয়ে মোটা মোট ফোটায় জল পড়তে লাগল নিঃশব্দে ; গাছের গুড়িতে ঠেস দিয়ে অমন আচঞ্চল কান্না দেখি নি ওর কোনোদিন । তার পরে মাঝখানে অনেকখানি ফাক । বিলেত থেকে ফিরে এসে দেখি কনির হয়েছে বিয়ে । মাথায় উঠেছে লালপেড়ে আঁচল, কপালে কুঙ্কুম, শাস্তগভীর চোখের দৃষ্টি, স্বর হয়েছে গম্ভীর। আমি কলকাতায় রসায়নের কারখানায় ওষুধ বানিয়ে থাকি। আমার দিনের পর দিন চলেছে কর্মচক্রের স্নেহহীন কর্কশধ্বনিতে ।