পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী এমন সময় বাজে তোমার বঁাশি ভরা জীবনের স্বরে। মরা দিনের নাড়ীর মধ্যে দবদবিয়ে ফিরে আসে প্রাণের বেগ কী বাজাও তুমি, জানি নে সে স্বর জাগায় কণর মনে কী ব্যথা । বুঝি বাজাও পঞ্চমরাগে দক্ষিণ হাওয়ার নবযৌবনের ভাটিয়ারি। শুনতে শুনতে নিজেকে মনে হয়— যে ছিল পাহাড়তলির ঝিবৃঝিরে নদী, তার বুকে হঠাৎ উঠেছে ঘনিয়ে শ্রাবণের বাদলরাত্রি । সকালে উঠে দেখা যায় পাড়ি গেছে ভেসে, একগুঁয়ে পাথরগুলোকে ঠেলা দিচ্ছে অসহ স্রোতের ঘূর্ণি-মাতন। আমার রক্তে নিয়ে আসে তোমার সুর— ঝড়ের ডাক, বন্যার ডাক, আগুনের ডাক, পাজরের উপরে আছাড়-খাওয়া মরণ-সাগরের ডাক, ঘরের শিকল-নাড়া উদাসী হাওয়ার ডাক । যেন হাক দিয়ে অাসে অপূর্ণের সংকীর্ণ খাদে পূর্ণ স্রোতের ডাকাতি, ছিনিয়ে নেবে, ভাসিয়ে দেবে বুঝি। অঙ্গে অঙ্গে পাক দিয়ে ওঠে কালবৈশাখীর ঘূর্ণি-মার-খাওয়া অরণ্যের বকুনি ।