পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী টাটুর উপর চেপেছিল আনাড়ি নবগোপাল, তাকে বিপদে ফেলবার জন্যে ছিল ছেলেদের কৌতুক । সমস্ত আঁকাবঁকা পথে বেঁকে বেঁকে ধ্বনিত হল অট্টহাস্ত । শৈলশৃঙ্গবাসের শূন্তত পূরণ করব কজনে মিলে, সেই রস জোগান দেবার অধিকারী আমরাই এমন ছিল আমাদের আত্মবিশ্বাস । অবশেষে চড়াই-পথ যখন শেষ হল তখন অপরাঙ্কের হয়েছে অবসান । ভেবেছিলেম আমোদ হবে প্রচুর, অসংযত কোলাহল উচ্ছ্বসিত মদিরার মতো রাত্রিকে দেবে ফেনিল করে । । শিখরে গিয়ে পৌছলেম অবারিত আকাশে, স্বর্য নেমেছে অস্তদিগন্তে নদীজালের রেখাঙ্কিত বহুদূরবিস্তীর্ণ উপত্যকায়। পশ্চিমের দিগবলয়ে, স্বরবালকের খেলার অঙ্গনে স্বর্ণসুধার পাত্ৰখানা বিপর্যস্ত, বিহবল তার প্লাবনে । প্রমোদমুখর সঙ্গীরা হল নিস্তব্ধ । দাড়িয়ে রইলেম স্থির হয়ে । এস্রাজটা নিঃশব্দ পড়ে রইল মাটিতে, পৃথিবী যেমন উন্মুখ হয়ে আছে তার সকল কথা থামিয়ে দিয়ে । মন্ত্ররচনার যুগে জন্ম হয় নি, মন্দ্রিত হয়ে উঠল না মন্ত্র উদাত্তে অনুদাত্তে ।