পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্রপুট २¢ যেমন লেগেছে বনের পাতায়, যেমন লেগেছে শরতে বিবাগী মেঘের উত্তরীয়ে । এরা সবাই মিলে পূর্ণ করেছে আজকে-দিনের বিশ্বছবি। আমার মনের মধ্যে চিকিয়ে উঠল আলোর ঝলক, হেমন্তের আতপ্ত নিশ্বাস শিহর লাগালো ঘুম-জাগরণের গঙ্গাযমুনায়— এও কি মেলে নি এই নিখিল ছবির পটে । জল-স্থল-আকাশের রসসত্রে অশথের চঞ্চল পাতার সঙ্গে ঝলমল করছে আমার যে অকারণ খুশি বিশ্বের ইতিবৃত্তের মধ্যে রইল না তার রেখা, তবু বিশ্বের প্রকাশের মধ্যে রইল তার শিল্প। এই রসনিমগ্ন মুহূর্তগুলি আমার হৃদয়ের রক্তপদ্মের বীজ, এই নিয়ে ঋতুর দরবারে গাথা চলেছে একটি মালা— আমার চিরজীবনের খুশির মালা। আজ অকৰ্মণ্যের এই অখ্যাত দিন ফাক রাখে নি ঐ মালাটিতে— আজও একটি বীজ পড়েছে গাথা । কাল রাত্রি এক কেটেছে এই জানালার ধারে। বনের ললাটে লগ্ন ছিল শুক্লপঞ্চমীর চাদের রেখা । এও সেই একই জগৎ, কিন্তু গুণী তার রাগিণী দিলেন বদল ক’রে ঝাপসা আলোর মূছনায়। রাস্তায়-চলা ব্যস্ত যে পৃথিবী এখন আঙিনায়-অচল-মেলা তার স্তব্ধ রূপ। লক্ষ নেই কাছের সংসারে, শুনছে তারার আলোয় গুঞ্জরিত পুরাণকথা। סן•א