পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী হঠাৎ সোদা গন্ধের দীর্ঘনিশ্বাস উঠল মাটি থেকে, মুহূর্তে এসে পড়ল বৃষ্টি প্রবল ঝাপটায়, হাওয়ার চোটে গুড়োনো জলের ফোট, পাংলা পর্দায় ঢেকে ফেললে সমস্ত বন, আড়াল করলে মন্দিরের চূড়ো, কাসর-ঘন্টার ঢং ঢং শব্দের দিল মুখ চাপা। রাত তিন পহরে থেমে গেল ঝড়বৃষ্টি, কালী হয়ে এল অন্ধকার নিকষ-পাথরের মতো ; কেবলই চলল ব্যাঙের ডাক, ঝিঝি পোকার শব্দ, জোনাকির মিটমিটি আলো, আর যেন স্বপ্নে-আঁৎকে-ওঠা দমকা হাওয়ায় থেকে থেকে জল-ঝরা ঝাউয়ের ঝরঝরানি। শান্তিনিকেতন চৈত্র ১৩৪০ দশ এই দেহখানা বহন করে আসছে দীর্ঘকাল বহু ক্ষুদ্র মুহুর্তের রাগদ্বেষ ভয়ভাবনা কামনার আবর্জনারাশি । এর আবিল আবরণে বারে বারে ঢাকা পড়ে আত্মার মুক্তরূপ। এ সত্যের মুখোশ পরে সত্যকে আড়ালে রাখে ; মৃত্যুর কাদামাটিতেই গড়ে আপনার পুতুল, তবু তার মধ্যে মৃত্যুর আভাস পেলেই নালিশ করে আর্তকণ্ঠে | খেলা করে নিজেকে ভোলাতে, কেবলই ভুলতে চায় যে সেটা খেলা ।