পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানুষের ধর্ম 86 ఫి আমাদের সমাজে উপলব্ধ হচ্ছে সেই পরিমাণেই আমরা সত্য মানুষ হয়ে উঠছি। মানুষের রিপু মাঝখানে এসে এই লোহহম-উপলব্ধিকে দুই ভাগ করে দেয়, একান্ত হয়ে ७८% अश्य् । o I তাই উপনিষদ বলেন, মা গৃধঃ— লোভ কোরো না। লোভ বিশ্বের মানুষকে ভূলিয়ে বৈষয়িক মানুষ করে দেয়। যে ভোগ মানুষের যোগ্য তা সকলকে নিয়ে, তা বিশ্বভৌমিক, তা মানুষের সাহিত্যে আছে, শিল্পকলায় অাছে, তাই প্রকাশ পায় মাতুষের সংসারযাত্রায় তার হৃদয়ের আতিথ্যে । তাই আমাদের শাস্ত্রে বলে, অতিথিদেবো ভব। কেননা ‘আমার ভোগ সকলের ভোগ’ এই কথাটা অতিথিকে দিয়ে গৃহস্থ স্বীকার করে ; তার ঐশ্বর্ষের সংকোচ দূর হয়। ব্যক্তিগত মানবের ঘরে সর্বমানবের প্রতিনিধি হয়ে আসে অতিথি, তার গৃহসীমাকে বিশ্বের দিকে নিয়ে যায়। না নিয়ে গেলে সেটা রাজপ্রাসাদের পক্ষেও দীনতা। এই আতিথ্যের মধ্যে আছে সোহহংতত্ত্ব— অর্থাৎ, আমি তার সঙ্গে এক যিনি আমার চেয়ে বড়ো । আমি তার সঙ্গে মিলে আছি যিনি আমার এবং আমার অতিরিক্ত । ł is আমাদের দেশে এমন-সকল সন্ন্যাসী আছেন যারা সোহহংতত্ত্বকে নিজের জীবনে অনুবাদ করে নেন নিরতিশয় নৈষ্কর্ম্যে ও নির্মমতায় । তারা দেহকে পীড়ন করেন জীবপ্রকৃতিকে লঙ্ঘন করবার জন্যে, মাচুষের স্বাধীন দায়িত্বও ত্যাগ করেন মানবপ্রকৃতিকে অস্বীকার করবার স্পধর্ণয় । তারা অহংকে বর্জন করেন যে অহং বিষয়ে আসক্ত, আত্মাকেও অমান্ত করেন যে আত্মা সকল আত্মার সঙ্গে যোগে যুক্ত। তারা র্যাকে ভূমা বলেন তিনি উপনিষদে-উক্ত সেই ঈশ নন যিনি সকলকেই নিয়ে আছেন ; র্তাদের ভূমা সব-কিছু হতে বৰ্জিত, স্বতরাং তার মধ্যে কর্মতত্ত্ব নেই। তারা মানেন না তাকে যিনি পৌরুষং নৃষু, মানুষের মধ্যে যিনি মহন্তত্ব, যিনি বিশ্বকৰ্ম মহাত্মা, যার কর্ম খণ্ডকৰ্ম নয়, র্যার কর্ম বিশ্বকর্ম ; যার স্বাভাবিকী জ্ঞানবলক্রিয়া চ— যার মধ্যে জ্ঞানশক্তি ও কর্ম স্বাভাবিক, যে স্বাভাবিক জ্ঞানশক্তিকর্ম অন্তহীন দেশে কালে প্রকাশমান । * * * পূর্বেই বলেছি, মানুষের অভিব্যক্তির গতি অন্তরের দিকে । এই দিকে তার সীমার আবরণ খুলে যাবার পথ। একদা মাহষ ছিল বর্বর, সে ছিল পশুর মতো, তখন ভৌতিক জীবনের সীমায় তার মন তার কর্ম ছিল বদ্ধ। জলে উঠল যখন ধীশক্তি তখন চৈতন্যের রশ্মি চলল সংকীর্ণ জীবনের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্বভৌমিকতার দিকে । ভারতীয় মধ্যযুগের কবিস্মৃতি ভাণ্ডার স্বহৃদ ক্ষিতিমোহনের কাছ থেকে কবি রজ্জবের একটি বাণী পেয়েছি। তিনি বলেছেন— ՀօկՀԳ