পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্রপুট সেই রুদ্র মানবের আত্মপরিচয়ে বঞ্চিত ক্ষীণ পাণ্ডুর আমি অপরিস্ফুটতার অসম্মান নিয়ে যাচ্ছি চলে। দুর্গম ভীষণের ওপারে অন্ধকারে অপেক্ষা করছে জ্ঞানের বরদাত্ৰী ; মানবের অভ্ৰভেদী বন্ধনশালা তুলেছে কালে পাথরে গাথা উদ্ধত চুড়া সূর্যোদয়ের পথে ; বহু শতাব্দীর ব্যথিত ক্ষত মুষ্টি রক্তলাঞ্ছিত বিদ্রোহের ছাপ লেপে দিয়ে যায় তার দ্বারফলকে ; ইতিহাসবিধাতার শ্রেষ্ঠ সম্পদ দৈত্যের লৌহদুর্গে প্রচ্ছন্ন ; আকাশে দেবসেনাপতির কণ্ঠ শোনা যায়— ‘এসো মৃত্যুবিজয়ী । বাজল ভেরি, তবু জাগল না রণদুর্মদ এই নিরাপদ নিশ্চেষ্ট জীবনে ; বৃহ ভেদ ক’রে স্থান নিই নি যুধ্যমান দেবলোকের সংগ্রামসহকারিতায় । কেবল স্বপ্নে শুনেছি ডমরুর গুরুগুরু, কেবল সমরযাত্রীর পদপাতকম্পন মিলেছে হৃৎস্পন্দনে বাহিরের পথ থেকে । যুগে যুগে যে মানুষের স্বাক্ট প্রলয়ের ক্ষেত্রে সেই শ্মশানচারী ভৈরবের পরিচয়জ্যোতি স্নান হয়ে রইল আমার সত্তায় ; শুধু রেখে গেলেম নতমস্তকের প্রণাম মানবের হৃদয়াসীন সেই বীরের উদ্দেশে— ৩৭