পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিপিকা So a আমি জিজ্ঞাসা করলেন, “আমার সেই পচিশ বছরের ীেবনকে কি আজও তোমার কাছে রেখে দিয়েছ।” লে বললে, “এই দেখো-না আমার গলার হার ।” দেখলেম, সেদিনকার বসন্তের মালার একটি পাপড়িও খসে নি । আমি বললেম, “আমার আর তো সব জীর্ণ হয়ে গেল, কিন্তু তোমার গলায় আমার সেই পচিশ বছরের বৌবন আজও তো মান হয় নি।” আস্তে আস্তে সেই মালাটি নিয়ে সে আমার গলায় পরিয়ে দিলে । বললে, “মনে আছে ? সেদিন বলেছিলে, তুমি সান্ধন চাও না, তুমি শোককেই চাও।” লজিত হয়ে বললেম, "বলেছিলেম । কিন্তু, তার পরে অনেক দিন হয়ে গেল, তার পরে কথন ভুলে গেলেম ।” সে বললে, “যে অন্তৰ্বামীর বর, তিনি তো ভোলেন নি । আমি সেই অবধি ছায়াতলে গোপনে বসে আছি । আমাকে বরণ করে নাও।” আমি তার হাতখানি আমার হাতে তুলে নিয়ে বললেম, “এ কী তোমার অপরূপ মূতি ।” সে বললে, “যা ছিল শোক, আজ তাই হয়েছে শাস্তি ।” C2 শ্রশান হতে বাপ ফিরে এল । তখন সাত বছরের ছেলেটি— গা খোলা, গলায় সোনার তাবিজ— একলা গলির উপরকার জানলার ধারে । কী ভাবছে তা লে আপনি জানে না । সকালের রৌত্র সামনের বাড়ির নিম গাছটির জাগডালে দেখা দিয়েছে ; কাচআম-ওয়াল গলির মধ্যে এসে ইকি দিয়ে দিয়ে ফিরে গেল। -- বাবা এসে খোকাকে কোলে নিলে ; খোকা জিজ্ঞাসা করলে, "মা কোথায় ।” বাৰা উপরের দিকে মাথা তুলে বললে, “স্বর্গে।” २ সে রাত্রে শোকে প্রান্ত বাপ, ঘুষিয়ে ঘুমিয়ে ক্ষণে ক্ষণে গুময়ে উঠছে। স্থয়ারে লন্ঠনের মিউনিটে আলো, দোলের গায়ে একজোড়া টিকটিকি ।