পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিপিক St ওদের ইস্কুলের পাশে ছাপাখানা আছে। সেখান থেকে ভাল্পে নিজের নামের কয়েকটা সীলের অক্ষর জুটিয়ে এনেছে । তার কোনোটা ছোটো, কোনোটা বড়ো । যে-কোনো বই পায় এই গীসের অক্ষরে কালি লাগিয়ে তাতে নিজের নাম ছাপাচ্ছে । মামাকে আশ্চর্য করে দিতে হবে । 轟門 8 আশ্চর্য করে দিলে । মামা এক সময়ে বসবার ঘরে এসে দেখে, ছেলেটি ভারি ব্যস্ত । .

  • কী কানাই, কী করছিল ।”

ভাগ্নে খুব আগ্রহ করেই দেখালে সে কী করছে। কেবল তিনটিমাত্র বই নয়, অন্তত পচিশখানা বইয়ে ছাপার অক্ষরে কানাইয়ের নাম । এ কী কাণ্ড। পড়াশুনোর নাম নেই, ছোড়াটার কেবল গেলা । আর, এ কী রকম খেলা । কানাইয়ের বহু দুঃখে জোটানো নামের অক্ষরগুলি হাত থেকে সে ছিনিয়ে নিলে । কানাই শোকে চীংকার করে কাদে, তার পরে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদে, তার পরে থেকে থেকে দমকায় দমকায় কেঁদে ওঠে— কিছুতেই সাৰনা মানে না । বুড়ি ঝি ছুটে এলে জিজ্ঞেস করলে, "কী হয়েছে, বাবা।” কানাই বললে, “আমার নাম ।” মা এসে বললে, “কী রে কানাই, কী হয়েছে।” কানাই রুদ্ধকণ্ঠে বললে, “আমার নাম ।” ঝি লুকিয়ে তার হাতে আস্ত একটি ক্ষীরপুলি এনে দিলে ; মাটিতে ফেলে দিয়ে সে বললে, “আমার নাম ।” মা এসে বললে, “কানাই, এই নে তোর সেই রেলগাড়িটা।” কানাই রেলগাড়ি ঠেলে ফেলে বললে, “আমার নাম।” (* থিয়েটার থেকে বন্ধু এল । মামা দরজার কাছে ছুটে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে, "কী হল ।” বন্ধু বললে, “ওরা রাজি হল না।” অনেক ক্ষণ চুপ করে থেকে মামা বললে, “আমার সর্বস্ব ধায় সেও ভালো, আমি নিজে থিয়েটার খুলব।”