পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8२ রবীন্দ্র-রচনাবলী দাদা বললে, “বল তো দাদি, কোথায় পেলি বর ।” স্বভত্রা বললে, "যেদিন রাজপুরীতে গেলেম দ্বারী বললে, কী চাও। আমি বললেম, রাজকন্তাদের কাছে পুতুল বেচতে চাই। সে বললে, এ পুতুল এখনকার দিনে চলবে না। ব’লে আমাকে ফিরিয়ে দিলে । একজন মাহ্য আমার কান্না দেখে বললে, দাও তে, ঐ পুতুলের একটু সাজ ফিরিয়ে দিই, বিক্রি হয়ে যাবে। ৮ সেই মানুষটিকে তুমি যদি পছন্দ কর দাদা, তা হলে আমি তার গলায় মালা দিই।” বুড়ে জিজ্ঞাসা করলে, “সে আছে কোথায় ।” নাৎনি বললে, “ঐ যে, বাইরে পিয়ালগাছের তলায় ।” বর এল ঘরের মধ্যে ; বুড়ে বললে, “এ যে কিষণলাল ।” কিষণলাল বুড়োর পায়ের ধুলো নিয়ে বললে, “ই, আমি কিষণলাল।” বুড়ো তাকে বুকে চেপে ধরে বললে, “ভাই, একদিন তুমি কেড়ে নিয়েছিলে আমার হাতের পুতুলকে, আজ নিলে আমার প্রাণের পুতুলটিকে ৷” নাংনি বুড়োর গলা ধরে তার কানে কানে বললে, "দাদা, তোমাকে স্বদ্ধ।” উপসংহার ভোজরাজের দেশে যে মেয়েটি ভোরবেলাতে দেবমন্দিরে গান গাইতে যায় সে কুড়িয়ে-পাওয়া মেয়ে । আচার্য বলেন, “একদিন শেষরাত্রে আমার কানে একখানি স্বর লাগল । তার পরে সেইদিন যখন সাজি নিয়ে পারুলবনে ফুল তুলতে গেছি তখন এই মেয়েটিকে ফুলগাছতলায় কুড়িয়ে পেলেম ।” i সেই অবধি আচার্য মেয়েটিকে আপন তমুরাটির মতে কোলে নিয়ে মানুষ করেছে ; এর মুখে যখন কথা ফোটে নি এর গলায় তখন গান জাগল । আজ আচার্ষের কণ্ঠ ক্ষীণ, চোখে ভালো দেখেন না। মেয়েটি তাকে শিশুর মতো মাতুষ করে। * কত যুবা দেশ বিদেশ থেকে এই মেয়েটির গান শুনতে আসে । তাই দেখে মাঝে মাঝে আচার্ধের বুক কেঁপে ওঠে ; বলেন, “যে বেঁটা আলগা হয়ে আসে ফুলটি তাকে ছেড়ে যায় ।” 峰 মেয়েটি বলে, “তোমাকে ছেড়ে আমি এক পলক বাচি নে ৷”