পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ꮌ8Ꮼ রবীন্দ্র-রচনাবলী অধ্যাপক তাকে ভৎসনা করে বলেন, “বিদ্যায় তোমার অনুরাগ নেই কেন।” সে বলে, “আমার অমুরাগ শুধু বিদ্যায় নয়, আরও নানা জিনিলে ।” অধ্যাপক বলেন, “সে-সব অনুরাগ ছাড়ো।” সে বলে, “তা হলে বিদ্যার প্রতিও আমার অনুরাগ থাকবে না।” Nම এমনি করে কিছু কাল যায়। রাজা অধ্যাপককে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার ছাত্রের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কে ।” অধ্যাপক বললেন, “রুচিরা ।” রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “আর কৌশিক ?” অধ্যাপক বললেন, “সে যে কিছুই শিখেছে এমন বোধ হয় না।” রাজা বললেন, “আমি কৌশিকের সঙ্গে রুচির বিবাহ ইচ্ছা করি ।” অধ্যাপক একটু হাসলেন ; বললেন, “এ যেন গোধূলির সঙ্গে উষার বিবাহের প্রস্তাব ।” রাজা মন্ত্রীকে ডেকে বললেন, “তোমার কন্যার সঙ্গে কৌশিকের বিবাহে বিলম্ব উচিত নয় ।” o, মন্ত্রী বললে, “মহারাজ, আমার কন্যা এ বিবাহে অনিচ্ছুক।” রাজা বললেন, “স্ত্রীলোকের মনের ইচ্ছা কি মুখের কথায় বোঝা যায়।” মন্ত্রী বললে, “তার চোখের জলও যে সাক্ষ্য দিচ্ছে ।” রাজা বললেন, “সে কি মনে করে কৌশিক তার অযোগ্য ।” মন্ত্রী বললে, “হা, সেই কথাই বটে।” রাজা বললেন, “আমার সামনে দুজনের বিদ্যার পরীক্ষা হোক । কৌশিকের জয় হলে এই বিবাহ সম্পন্ন হবে।” পরদিন মন্ত্রী রাজাকে এসে বললে, “এই পণে আমার কন্যার মত আছে।” 8 বিচারসভা প্রস্তুত। রাজা সিংহাসনে ব’লে, কৌশিক তার সিংহাসনতলে । স্বয়ং অধ্যাপক রুচিকে সঙ্গে করে উপস্থিত হলেন । কৌশিক আসন ছেড়ে উঠে তাকে প্রণাম ও রুচিকে নমস্কার করলে। রুচি দৃকপাত করলে না। কোনোদিন পাঠশালার রীতিপালনের জন্তেও কৌশিক রুচির সঙ্গে তর্ক করে নি। অন্য ছাত্রেরাও অবজ্ঞা করে তাকে তর্কের অবকাশ দিত না । তাই আজ যখন তার