পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিপিকা । ১৬৩ তার মূল বাণীটি হচ্ছে, “আছি, আছি ; আমি আছি, আমরা আছি।” সে ভারি খুশির কথা। সেই খুশিতে বিশ্বের অণু,পরমাণু থর্থর করে কপিছে। ঐ বটগাছের সঙ্গে আমার আজ সেই এক ভাষায় সেই এক খুশির কথা চলছে। ও আমাকে বলছে, “আছ হে বটে ?” আমি সাড়া দিয়ে বলছি, “আছি হুে মিতা।” এমনি করে ‘আছি’তে “আছি’তে এক তালে করতালি বাজছে । २ ঐ বটগাছটার সঙ্গে যখন আমার আলাপ শুরু হল তখন বসস্তে ওর পাতাগুলো কfচ ছিল ; তার নানা ফাক দিয়ে আকাশের পলাতক আলো ঘাসের উপর এসে পৃথিবীর ছায়ার সঙ্গে গোপনে গলাগলি করত । তার পরে আষাঢ়ের বর্ষা নামল ; ওরও পাতার রঙ মেঘের মতে গম্ভীর হয়ে এসেছে। আজ সেই পাতার রাশ প্রবণের পাকা বুদ্ধির মতো নিবিড়, তার কোনো ফাক দিয়ে বাইরের আলো প্রবেশ করবার পথ পায় না । তখন গাছটি ছিল গরিবের মেয়েটির মতো ; আজ সে ধনীঘরের গৃহিণী, যেন পৰ্যাপ্ত পরিতৃপ্তির চেহারা । আজ সকালে সে তার মরকতমণির বিশনলী হার ঝলমলিয়ে আমাকে বললে, "মাথার উপর আমনতরো ইটপাথর মুড়ি দিয়ে বসে আছ কেন । আমার মতো একেবারে ভরপুর বাইরে এসো-না ।" আমি বললেম, "মাস্থ্যকে যে ভিতর বাহির দুই বাচিয়ে চলতে হয় ।” গাছ নড়েচড়ে বলে উঠল, “বুঝতে পারলেম না।” আমি বললেম, "আমাদের দুটো জগং, ভিতরের আর বাইরের ।” গাছ বললে, “সর্বনাশ ! ভিতরেরটা আছে কোথায় ।” "আমার আপনারই ঘেরের মধ্যে ।”

  • সেখানে কর কী ।”
  • नृश♚ कग्नि ।”

"স্বষ্টি আবার ঘেরের মধ্যে ! তোমার কথা বোঝবার.জে নেই ।” আমি বললেম, "যেমন তীরের মধ্যে বাধা প'ড়ে হয় নদী, তেমনি ঘেরের মধ্যে ধরা প'ড়েই তো স্থটি। একই জিনিস ঘেরের মধ্যে জাটকা পড়ে কোথাও হীরের টুকরো, কোথাও বটের গাছ ।” গাছ বললে, “তোমার ঘেরটা কী রকম শুনি ।”