পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭ • রবীন্দ্র-রচনাবলী সে হেসে বললে, "না, এল ব’লে ।” তখনি খাতাঞ্জিখানায় এসে মনকে বললেম, "এবার কাজ বন্ধ করো ।” মন বললে, “সে কী কথা । লোকে যে বলবে অকৰ্মণ্য ।” আমি বললেম, "বলুক গে।” মন বললে, “তোমার হল কী । কিছু খবর পেয়েছ নাকি ৷” আমি বললেম, “হা, খবর এসেছে।” *কী খবর ।” মুশকিল, স্পষ্ট ক’রে জবাব দিতে পারি নে। কিন্তু, খবর এসেছে। মানস-সরোবরের তীর থেকে আলোকের পথ বেয়ে বাকে বাকে হাস এসে পৌছল। মন মাথা নেড়ে বললে, “মস্ত বড়ো রথের চুড়ো কোথায়, আর মন্ত ভারি সমারোহ ? কিছু তো দেখি নে, শুনি নে ৷” বলতে বলতে আকাশে কে যেন পরশমণি ছুইয়ে দিলে। সোনার আলোয় চার দিক ঝলমল করে উঠল। কোথা থেকে একটা রব উঠে গেল, “দৃত এসেছে।” আমি মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে দূতের উদ্দেশে জিজ্ঞাসা করলেম, “আসছেন নাকি ৷” চার দিক থেকে জবাব এল, “হা, আসছেন।” মন ব্যস্ত হয়ে বলে উঠল, "কী করি ! সবেমাত্র আমার ছয়তলা বাড়ির ছাদ পিটোনো চলছে ; আর, সাজ সরঞ্জাম সব তো এসে পৌছল না ।” উত্তর শোনা গেল, “আরে ভাঙো ভাঙো, তোমার ছতলা বাড়ি ভাঙে ৷” মন বললে, “কেন।” উত্তর এল, “আজ আগমনী যে তোমার ইমারতটা বুক ফুলিয়ে পথ আটকেছে।” মন অবাক হয়ে রইল । আবার শুনি, “বোটিয়ে ফেলো তোমার সাজ সরঞ্জাম ।” মন বললে, "কেন ।” “তোমার সরঞ্জাম যে ভিড় করে জায়গা জুড়েছে।” যাক গে। কাজের দিনে ব'লে ব'লে ছতলা বাড়ি গাথলেম, ছুটির দিনে একে একে সব-ক'টা তলা ধূলিসাং করতে হল। কাজের দিনে সাজ সরঞ্জাম হাটে হাটে জড়ো করা গেল, ছুটির দিনে সমস্ত বিদায় করেছি। কিন্তু, মস্ত বড়ো রথের চুড়ো কোথায়, আর মস্ত ভারি সমারোহ ? মন চার দিকে তাকিয়ে দেখলে । بي