পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে ›ህሎግ এতে সে ভারি খুশি । যেমন খুশি হয় জগতের দোর্দগুপ্ৰতাপের দল। দয়াময়ী আশ্বাস দিয়ে বললে, ভয় নেই, আমি তাকে কিছু বলব না । আমি বললুম, তোমাকে ভয় কে না করে । ছুবেল ছ বাটি ক'রে দুধ খাও— গায়ে কী রকম জোর । মনে আছে তো, তোমার হাতে লাঠি দেখে সেই বাঘটা লেজ গুটিয়ে একেবারে মুটুপিসির বিছানার নীচে গিয়ে লুকিয়েছিল। বীরাঙ্গনা ভারি খুশি । মনে করিয়ে দিলে ভালুকটার কথা— সে পালাতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিল নাবার ঘরের স্বানের জলের টবের মধ্যে । সেই যে মাহষটার ইতিহাস গড়ে উঠেছিল আমার একলার হাতে এখন থেকে পুপেও তাতে যেখানে-সেখানে জোড়া দিতে লাগল। আমি যদি বা বলি, একদিন বেলা তিনটার সময় সে এসেছিল আমার কাছে দাড়ি কামাবার খুর চেয়ে নিতে, আর নিতে পালি বিস্কুটের টিন, পুপে খবর দেয়, সে ওর কাছ থেকে নিয়ে গেছে পশম বোনবার কুরুশ-কাটি । সব গল্পেরই একটা আরম্ভ আছে, শেষ আছে, কিন্তু ঐ-যে ‘এক ষে আছে মানুষ’ তার আর শেষ নেই। তার দিদির জর হয়, ডাক্তার ডাকতে যায়। টমি কুকুর আছে, বেড়ালের নখের আঁচড় লেগে তার নাক যায় ছ’ড়ে । পিছন দিক থেকে গোরুর গাড়ির উপর চ'ড়ে বসেছিল, তাই নিয়ে গাড়োয়ানের সঙ্গে হয় . বিষম বচলা । উঠোনে কলতলায় পিছলে পড়ে বামুন ঠাকরুনের মাটির ঘড়া দেয় ভেঙে । মোহনবাগানের ফুটবল-ম্যাচ দেখতে গিয়েছিল, পকেট থেকে সাড়ে তিন আনা পয়সা কে নেয় তুলে ; ফিরতি রাস্তায় ভীমনাগের দোকান থেকে সন্দেশ কেনা বাদ গেল। বন্ধু আছে কিন্তু চৌধুরী, তার ওখানে গিয়ে কুচো চিংড়ি ভাজা আর আলুর দম ফরমাশ করে। এমনি একটার পর একটা চলছে দিনের পর দিন । এর সঙ্গে পূপে জুড়েছে, কোনোদিন দুপুরবেলায় ওর ঘরে গিয়ে বলেছে মায়ের আলমারি থেকে পাক প্রণালীর বইখানা খুজে বের করতে, বন্ধু স্থধাকান্তবাৰু শিখতে চায় মোচার ঘণ্ট তৈরি করা। আর-একদিন পুপের স্ববালিত নারিকেল তেল নিয়ে গেল চেয়ে, ভয় হয়েছে মাথায় টাক প'ড়ে আসছে দেখে। আর-একদিন নিদার ওখানে গান শুনতে গেল, দিনা তখন তাকিয়া ঠেলান দিয়ে ঘুমিয়ে । এই-ষে আমাদের এক যে আছে মান্থব, এর একটা নাম নিশ্চয়ই আছে। লে কেবল আমরা দুজনেই জানি, আর-কাউকে বলা বারণ। এইখানটাতেই গল্পের মজা। এক যে ছিল রাজা, তারও নাম নেই ; রাজপুত্র, তারও নেই। আর রাজকন্যা, যার