পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে ఏ) আহারের কী ব্যবস্থা । একেবারেই বন্ধ । প্রাণটা ? р সেই চিন্তাটাই সব চেয়ে তুচ্ছ । পাকযন্ত্রের বিরুদ্ধে ওঁদের সত্যাগ্রহ। বলছেন, ঐ জঠরযন্ত্রটার মতো প্যাচাও জিনিস আর নেই। যত রোগ, যত যুদ্ধবিগ্রহ, যত চুরিডাকাতির মূল কারণ তার নাড়ীতে নাড়ীতে । দাদা, কথাটা সত্য হলেও হজম করা শক্ত । তোমার পক্ষে শক্ত । কিন্তু, ওঁরা হলেন বৈজ্ঞানিক । পাকযন্ত্রটা উপড়ে ফেলেছেন, পেট গেছে চুপসে, আহার বন্ধ, নন্ত নিচ্ছেন কেবলই । নাক দিয়ে পোষ্টাই নিচ্ছেন হাওয়ায় শুষে । কিছু পেচচ্ছে ভিতরে, কিছু হাচতে হাচতে বেরিয়ে যাচ্ছে । দুই কাজ একসঙ্গেই চলছে, দেহটা সাফও হচ্ছে, ভতিও হচ্ছে । আশ্চর্য কৌশল। কলের জাত বসিয়েছেন বুঝি ? হাস মুরগি পাট ভেড়া আলু পটোল একসঙ্গে পিষে শুকিয়ে ভতি করছেন ডিবের মধ্যে ? না। পাকযন্ত্র, কসাইখানা, দুটোই সংসার থেকে লোপ করা চাই । পেটের দায়, বিল-চোকানোর ল্যাঠা একসঙ্গে মেটাবেন । চিরকালের মতো জগতে শাস্তিস্থাপনার উপায় চিস্তা করছেন । নস্তটা তবে শস্ত নিয়েও নয়, কেননা সেটাতেও কেনাবেচার মামলা । বুঝিয়ে বলি। জীবলোকে উদ্ভিদের সবুজ অংশটাই প্রাণের গোড়াকার পদার্থ, সেটা তো জান ? পাপমূপে কেমন করে বলব যে জানি, কিন্তু বুদ্ধিমানেরা নিতান্ত যদি জেদ করেন তা হলে মেনে নেব । দ্বৈপায়ন পণ্ডিতের দল ঘাসের থেকে সবুজ সার বের করে নিয়ে স্বর্ষের বেগনিপেরোনো আলোয় শুকিয়ে মুঠো মুঠো নাকে ঠুসছেন। সকালবেলায় ডান নাকে ; মধ্যাহ্নে বঁা নাকে ; সায়াহ্নে দুই নাকে একসঙ্গে, সেইটেই বড়ো ভোজ । ওঁদের সমবেত ইচির শম্বে চমকে উঠে পশুপক্ষীরা সাংরিয়ে সমুদ্র পার হয়ে গেছে। শোনাচ্ছে ভালো। অনেক দিন বেকার আছি দাদা, পাকযন্ত্রটা হন্তে হয়ে উঠেছে— তোমাদের ঐ নস্তটার দালালি করতে পারি যদি নিযুমার্কেটে, তা হলে— অল্প একটু বাধা পড়েছে, সে কথা পরে বলব। তাদের আর-একটা মত আছে। তারা বলেন, মানুষ জ্ব পায়ে খাড়া হয়ে চলে ব'লে তাদের হৃদযন্ত্র পাকযন্ত্ৰ ঝুলে ঝুলে মরছে ; অস্বাভাবিক অত্যাচার ঘটেছে লাখো লাখে বৎসর ধ’রে । তার জরিমানা ՀԵIֆՎ)